হাসপাতালে।—নিজস্ব চিত্র
স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে ঝোপের মধ্যে একটি শিশুকে পড়ে থাকতে দেখে পড়শিদের ডেকে ওই পথশিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন এক শিক্ষক। শনিবার পুরুলিয়া শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাথরডি পাড়া এলাকার ঘটনা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগে ওই শিশুকন্যার জন্ম হয়েছে। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক শিবশঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘শিশুটির গায়ের রং হলুদ হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে দেখে মনে হচ্ছে সে জন্ডিসে আক্রান্ত। তাকে নবজাত শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।’’
পাথরডি এলাকার বাসিন্দা উল্লাস চোধুরী পুরুলিয়ার মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সস্টিটিউশনে শিক্ষকতা করেন। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে ঝোপের কাছাকাছি কয়েকটা কুকুরকে চিৎকার করতে দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। কাছে গিয়ে দেখেন কাপড়ে জড়ানো অবস্থায় একটি শিশু পড়ে রয়েছে। শিশুটি কাঁদছিল। তাঁর কথায়, ‘‘অত ছোট্ট শিশুকে কয়েকটা কুকুর ঘিরে রেখেছে দেখে আঁতকে উঠেছিলাম। আমি কুকুরগুলিকে তাড়িয়ে চিৎকার করে লোকজনকে ডাকি।’’ খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দৌড়ে আসেন। এলাকার কাউন্সিলর বিভাস দাস পুলিশে খবর দেন। ঝোপের মধ্যে থেকে শিশুটিকে তুলে বুকে জড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসেন এলাকার বাসিন্দা পারভিন সেন। তিনিই শিশুর গায়ের ধুলোবালি সাফ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘মিষ্টি মেয়েটাকে ওই ভাবে ফেলে দিয়ে যেতে পারল কী করে? আমারই ওকে কোলছাড়া করতে ইচ্ছে যাচ্ছিল না। কিন্তু চিকিৎসা করা দরকার বলেই হাসপাতালে ওকে ভর্তি করা হল।’’
এলাকার বাসিন্দা অনামিকা চৌধুরী, পুলিশকর্মী সৌম্যদীপ মল্লিক বলেন, ‘‘এইটুকু সময়েই শিশুটির উপরে সবার মায়া পড়ে গিয়েছে।’’ তাঁরা সবাই ওই শিশুর নাম রেখেছেন— সনিয়া। পুরুলিয়ার চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর দীপঙ্কর সরকার বলেন, ‘‘শিশুকন্যাটি সুস্থ হবার পরে হোমে পাঠানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy