বাংলাদেশের আদালতে ফের পিছোল বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা পরিযায়ী শ্রমিক সোনালি বিবি-সহ ছ’জনের মামলা। পরবর্তী শুনানি ৩০ নভেম্বর। সূত্রের খবর, আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেও কেন ভারতীয় হাই কমিশন যোগাযোগ করেনি, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারক। দেশে ফিরতে চেয়ে সোনালিরা কান্নাকাটি করছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের সাহায্য করতে বাংলাদেশে যাওয়া বীরভূমেরই যুবক মফিজুল শেখ।
জুনে দিল্লিতে কর্মরত পাইকর থানা এলাকার বাসিন্দা সোনালি ও সুইটি বিবি-সহ ছ’জনকে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয় বলে অভিযোগ। ২০ অগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরে। তখন থেকেই তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংশোধনাগারে বন্দি। সোনালিদের বিরুদ্ধে গত ৬ নভেম্বর চার্জ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর কথা ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। তা পিছোয় ২০ নভেম্বর পর্যন্ত।
সূত্রের খবর, এ দিন সোনালিদের পক্ষের আইনজীবী শফিক এনায়েত বিচারককে জানান, ভারত থেকে এক জন এসেছেন। তখন মফিজুল বিচারককে জানান, কলকাতা হাই কোর্টে ২৮ নভেম্বর এ সংক্রান্ত মামলার শুনানি আছে। সেই প্রেক্ষিতে পরবর্তী তারিখের আর্জিও জানান। মফিজুলের দাবি, বিচারক তাঁকে বলেন, “হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট করছেন। কিছুই তো হচ্ছে না। নির্দেশ দেওয়ার পরেও ভারতীয় হাই কমিশন যোগাযোগ পর্যন্ত করেনি!” সোনালিদের আগেই ভারতীয় বলে চিহ্নিত করেছিল বাংলাদেশের আদালত। সোনালিদের ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনকে আদালতের নির্দেশের প্রতিলিপিও পাঠানো হয়। তার পরেও হাই কমিশন উদ্যোগী হয়নি বলেই অভিযোগ। এ দিন ফোনে মফিজুল বলেন, “সে কারণে দৃশ্যত ক্ষুব্ধ ছিলেন বিচারক। পরের দিন নিশ্চয় চার্জ গঠন হবে। তার আগে, কলকাতা হাই কোর্টে কী হয় দেখি।”
মফিজুল জানান, সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সোনালির আল্ট্রা-সোনোগ্রাফি করিয়েছেন। বলা হয়েছে, যে কোনও দিন সন্তানের জন্ম দেবেন তিনি। তাঁর কথায়, “শুনলাম, সে ক্ষেত্রে ওঁকে রাজশাহী নিয়ে যাওয়া হবে। এ দিন আদালতে সোনালি-সুইটিরা কান্নাকাটি করছিলেন দেশে ফেরার জন্য।” গত ২৬ সেপ্টেম্বর হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ওই ছ’জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফেরাতে হবে। কেন্দ্র তা না মানায় হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে আদালত অবমাননার মামলা করে সোনালি-সুইটিদের পরিবার। ১১ নভেম্বর কেন্দ্রকে দু’সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে বলে ডিভিশন বেঞ্চ। ২৮ নভেম্বর শুনানি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)