Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

অনুদান কমবে? বাড়ছে ‘চিন্তা’

মেডিক্যালের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, কোনও হাসপাতালের চাহিদা অনুসারে স্বাস্থ্য ভবন যন্ত্রপাতি কেনা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুদান দেয়।

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৬
Share: Save:

স্ট্যাম্প জালিয়াতির জেরে গত কয়েক মাসে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালর বহির্বিভাগে ‘কাগজে-কলমে’ রোগীর সংখ্যা কমেছে। হাসপাতাল অন্দরের খবর, ওই ঘটনার জেরে হাসপাতালের অনুদান কমে যাবে কি না তা নিয়ে ‘আশঙ্কা’ তৈরি হয়েছে। পুরো বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনকে জানাতে চলেছেন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।

মেডিক্যালের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, কোনও হাসপাতালের চাহিদা অনুসারে স্বাস্থ্য ভবন যন্ত্রপাতি কেনা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুদান দেয়। এমনকি, হাসপাতালে চিকিৎসক বাড়ানো হবে, না কমিয়ে ফেলা হবে, তা-ও নির্ধারণ করা হয় রোগীর সংখ্যা দেখেই। এ নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বুধবার বলেন, “বাঁকুড়া মেডিক্যালে টিকিটে স্ট্যাম্প দেওয়া নিয়ে দালালচক্র চলার ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। হাসপাতালের অনুদান কমা বা বাড়ার বিষয়টি একাধিক নিরিখের উপরে নির্ভর করে। বিষয়টি আমরা দেখছি।”

হাসপাতাল সূত্রের দাবি, ইদানীং বহির্বিভাগে দালালচক্র সক্রিয় হয়ে ওঠায় সঙ্কট তৈরি হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কয়েক মাস ধরে তাঁরা খেয়াল করছিলেন বাঁকুড়া মেডিক্যালের বহির্বিভাগে পুরনো রোগীদের খাতায়-কলমে সংখ্যা বেশ কমে গিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে রোগীর ভিড় তেমন কমেনি। খোঁজ করতে গিয়ে কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, এর পিছনে রয়েছে দালাল চক্র।

তদন্তে জানা গিয়েছে, ‘ফলো-আপ’ চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের একটা বড় অংশই টিকিট কাউন্টারের লাইনের ভিড় এড়াতে দালালদের টাকা দিয়ে প্রেসক্রিপশনে নকল স্ট্যাম্পের ছাপ লাগিয়ে নিচ্ছিলেন। এর ফলে, হাসপাতালের খাতায় ওই রোগীদের নাম ওঠেনি। অথচ, বাইরে থেকে টিকিটে স্ট্যাম্পের ছাপ নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন রোগীরা। তা রপরে ‘স্লিপ’ নিয়ে বিনামূল্যে ওষুধও নিয়েছেন হাসপাতাল থেকে।

ঘটনাটি জানতে পেরেই মঙ্গলবার থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালের স্ট্যাম্পের কালির রং বদলে ফেলা হয়েছে। হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান, সুপার গৌতমনারায়ণ সরকার-সহ অন্য কর্তারা মঙ্গলবার বহির্বিভাগে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে দালালদের কাছ থেকে স্ট্যাম্পের কালির ছাপ নেওয়া বেশ কয়েকজন রোগীকে চিহ্নিতও করেন।

বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ বুধবার বলেন, “রোগীদের ওষুধ দেওয়ার সময় চিকিৎসকের লেখা ‘রিক্যুইজ়িশন স্লিপ’ তাঁদের কাছ থেকে জমা নেওয়া হয়। ফলে, হাসপাতালে নাম ‘রি-এন্ট্রি’ না করিয়েও যাঁরা ওষুধ নিয়েছেন, তাঁদের হিসেব পাওয়া যাবে। কিন্তু এই ঘটনায় বহু রোগীর নামই নথিভুক্ত না হওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে ‘কাগজে-কলমে’ বহির্বিভাগের রোগীর সংখ্যা কমে গিয়েছে। এ জন্য যাতে হাসপাতালের অনুদান কমিয়ে দেওয়া না হয়, তা স্বাস্থ্য দফতরকে জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Medical College Middleman Government Aid
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE