Advertisement
E-Paper

আজ নির্মল জেলা ঘোষণা বীরভূমকে

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, যে সামান্য কিছু পরিবারে শৌচাগার করা যায়নি, সেই পরিবারগুলি হয় জায়গা দিতে পারেনি, না হলে পরিবার ভেঙে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৮ ০১:২০
Share
Save

গত কয়েক মাসে একে একে জেলার ১৯টি পঞ্চায়েত সমিতিই ‘নির্মল’ ঘোষিত হয়েছিল। অপেক্ষা ছিল নির্মল জেলা হিসেবে উৎসব উদযাপনের। আগামী কাল, বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে সেই উৎসবই পালন করতে চলেছে বীরভূম।

রাজ্যের মধ্যে ১১-তম জেলা হিসেবে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আগামী কাল সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে হবে ‘নির্মল বীরভূম’ উৎসব। উপস্থিত থাকবেন একাধিক মন্ত্রী, রাজ্য ও জেলার আমলারা। কার্পেট, নীল-সাদা কাপড়, ফ্লেক্স, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, বেলুনে তারই সাজ। বুধবার বিকেলের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রস্তুতি-পর্ব।

জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী জানান, যে জেলায় ৭০ শতাংশ মানুষ (রাজ্যের মধ্যে সব চেয়ে বেশি) মুক্ত শৌচকর্মে অভ্যস্ত ছিলেন। বাড়িতে বাড়িতে শৌচাগার গড়ে তা ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করা মোটেই সহজ কাজ ছিল না। সকলের মিলিত প্রয়াসেই এটা সম্ভব হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী— জেলায় মোট পরিবারের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ১৫ হাজার। শৌচাগার ছিল ২ লাখ পরিবারের বাড়িতে। ২০১২ সালের ‘বেসলাইন সার্ভে’ অনুযায়ী— ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৬৬টি বাড়িতে শৌচাগার ছিল না। বেসলাইন সার্ভে অনুযায়ী প্রতিটি বাড়িতেই শৌচাগার গড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নোডাল অফিসার (নির্মল বাংলা) বুদ্ধদেব পান। এ ছাড়াও সমীক্ষায় বাদ পড়েছিল অথচ শৌচাগার ছিল না এমন ৩৯ হাজার ৮৬৫টি পরিবারে শৌচাগার গড়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে শৌচাগার গড়ে দেওয়াই নয়, মানুষ যাতে শৌচাগর ব্যবহার করেন সেটাই সব চেয়ে বেশি চ্যালেজ্ঞ ছিল প্রশাসনের কাছে। একসঙ্গে গোটা জেলাকে ‘নির্মল’ করার লক্ষ্যে না এগিয়ে পঞ্চায়েত ধরে ধরে এগিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সে জন্য নানা কর্মসূচি নিয়েছিল প্রশাসন। কেন মুক্ত শৌচ মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক, তা জানাতে সিএলটিএস (কমিউনিটি লেড টোটাল স্যানিটেশন) দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। স্বাস্থ্যকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, আশাকর্মী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সাধারণ মানুষ এমনকী স্কুল পড়ুয়াদেরও কাজে লাগানো হয়। প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়, অতীতে দেখা গিয়েছে, ভোরে নানা এলাকায় পৌঁছে ‘খোলা স্থানে শৌচকর্ম নয়’— সেই বার্তা দিচ্ছেন প্রশাসনের শীর্ষ আমলা এবং জনপ্রতিনিধিরা। শৌচাগার ব্যবহার কেন জরুরি, তা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে কখনও বাউল, ভাওয়াইয়া তো কখনও পুতুল নাটককে হাতিয়ার করা হয়েছে।

স্বচ্ছ ভারত অভিযানের বাংলা সংস্করণ ‘মিশন নির্মল বাংলায়’ মুক্ত শৌচহীন জেলা ঘোষিত হওয়ার পর পরের ধাপে পৌঁছতে কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই বর্জ্যকে পচনশীল এবং অপচনশীল— দু’টি ভাগে ভাগ করে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, প্লাস্টিক ব্যবহার কমানোর মতো দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন জানায়, জেলার ১৬৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ২০টি নির্মল পঞ্চায়েতে এই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৮টিতে পরিষেবা শুরু হয়েছে। কিন্তু তার পরও জেলার বিভিন্ন অংশ থেকে কিছু মানুষের অভিযোগ সব পরিবারে শৌচাগার গড়া হয়নি।

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, যে সামান্য কিছু পরিবারে শৌচাগার করা যায়নি, সেই পরিবারগুলি হয় জায়গা দিতে পারেনি, না হলে পরিবার ভেঙে গিয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায়, মাইক ব্যবহার বা প্রকাশ্য র‌্যালি করা হচ্ছে না। পুরো অনুষ্ঠানই হবে ইন্ডোরে। মানুষের অভ্যাস বদলাতে যে সব পরিকল্পনা সাড়া ফেলেছিল, বিভিন্ন ব্লকের সে সব ধারণা বা উদ্যোগ ও নানা অনুষ্ঠানে সাজানো হয়েছে উৎসব। সম্মানিত করা হবে নির্মল বীরভূম গড়ার কাজে সামিল উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি, ক্লাবকে। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ডাকবিভাগের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত হবে একটি ডাকটিকিট।

Mission Nirmal Bangla মিশন নির্মল বাংলা District Administration

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}