Advertisement
১১ মে ২০২৪

চাঁদা ১ লক্ষ! জোর বিতর্ক

১ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবি মানেননি বিজেপি-র জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলও।

চাঁদার স্লিপ। নিজস্ব চিত্র

চাঁদার স্লিপ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
 খয়রাশোল শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:০৬
Share: Save:

রসিদে উল্লেখ রয়েছে দলের সম্মেলনের জন্য সর্বোচ্চ চাঁদা নেওয়া যাবে ১৯ হাজার টাকা। কিন্তু সেখানেই চাওয়া হয়েছে এক লক্ষ টাকা চাঁদা!

অভিযোগ, খয়রাশোলের গঙ্গারামচক মৌজায় রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল)খোলামুখ কয়লাখনি থেকে ওই বিরাট অঙ্ক দাবি করেছেন বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি। স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এমনই একটি রসিদকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, কী ভাবে তোলা আদায় শুরু করছে বিজেপি, এটা তার নমুনা মাত্র। দলের অঞ্চল সভাপতি বিকাশ ঘোষ বলেন, ‘‘সম্মেলনের নামে ১ লক্ষ টাকা চাওয়া তোলা আদায়ের শামিল। সেটাই করা হয়েছে।’’

বিজেপি-র স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি রথিলাল সিংহ ওই সংস্থার কাছে চাঁদার রসিদ দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও, রসিদে টাকার কোনও অঙ্ক লেখা হয়নি বলেই দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, পিডিসিএল ওই খনির বরাত পেলেও আদতে একটি ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে ওই কয়লাখনি চলে। ওই সংস্থা বকলমে চলায় শাসকদলের লোকজন। রথিলাল বলেন, ‘‘ওই সংস্থার সাইট ইন চার্জকে দলের নির্দেশেই চাঁদার রসিদ দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি টাকার অঙ্ক লিখতে বারণ করেছিলেন। আদায়কারীর সই ও টাকা অঙ্ক লেখা দুটো একই লোকের নয়। এটা শাসকদলের চক্রান্ত। পাছে তাদের কর্তৃত্বে ভাগ বসে।’’

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে কয়লার ব্লক-বণ্টন বাতিল হওয়ার আগে খয়রাশোলের কৃষ্ণপুর-বড়জোড় ও গঙ্গারামচক মৌজার মাটির নীচে কয়লা উত্তোলনের বরাত পেয়েছিল বেসরকারি সংস্থা ‘এমটা’। সেই কয়লা বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। ২০১১ সালের পর থেকে কৃষ্ণপুর-বড়জোড় অঞ্চল এবং তার পরে গঙ্গরামচকে কিছু অংশে খোলামুখ খনি গড়ে কয়লা উত্তোলন শুরু করেছিল তারা।

কিন্তু, ২০১৪ সালে সারা দেশে ২০৪টি কোল-ব্লক বাতিলের তালিকায় ছিল খয়রাশোলের দু’টি ব্লক-ও। পরের বছর নতুন কয়লা ব্লক বণ্টন আইনের আওতায় পিডিসিএল রাজ্যে যে পাঁচটি কোল ব্লক থেকে কয়লা উত্তোলনের দায়িত্ব পায়, সেই তালিকায় নাম ওঠে বড়জোড় ও গঙ্গারামচকে। কিন্তু পরিবেশ ও বন মন্ত্রকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন না মেলায় ২০১৭ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত সেখানে কয়লা উত্তোলন করা যায়নি। জট কাটিয়ে ২০১৭-এর শেষ দিকে কয়লা উত্তোলনের প্রস্ততি শুরু হয়। সেই কয়লা খনি থেকে ১ লক্ষ টাকা আদায় করছে বিজেপি, এমন খবর রটতেই বিতর্ক তৈরি হয়। ঠিকা সংস্থার সাইট ইনচার্জ জানিয়েছেন, তিনি ১ লক্ষ টাকার রসিদই পেয়েছেন। সেটা সংস্থার তরফে পিডিসিএলকে জানানো হয়েছে।

১ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবি মানেননি বিজেপি-র জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলের সম্মেলনের জন্য চাঁদা ও কুপন দুটোই দলের প্রত্যেক মণ্ডল সভাপতিকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে লুকোনো কিছু নেই। প্রত্যেক রাজনৈতিক দল চাঁদা নেয়।’’

কিন্তু যেখানে ১৯ হাজার টাকা সর্বোচ্চ নির্ধারিত, সেখানে ১ লক্ষ কেন? জেলা সভাপতির দাবি, ‘‘বিজেপি-কে কালিমালিপ্ত করতে এটা শাসকদলের চক্রান্ত।’’ তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

PDCL BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE