পুরুলিয়ার জঙ্গলে আগেই বন দফতরের ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল চিতাবাঘের অস্তিত্ব। এ বার বাঁকুড়ার রাস্তায় মিলল পূর্ণবয়স্ক একটি চিতাবাঘের দেহ।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাঁকুড়ার বাঁকাদহ রেঞ্জের পচাডহরা এলাকায় বাঁকাদহ-জয়রামবাটি সড়ক থেকে চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার করে বন দফতর। প্রাথমিক তদন্তের পর বন দফতরের অনুমান, কোনও গাড়ির ধাক্কায় চিতাবাঘটির মৃত্যু হয়েছে। চিতাবাঘটির সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গিনীও পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে এসেছে, এই আশায় রাতে জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে পায়ের ছাপের কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন বনকর্মীরা। নমুনাগুলি পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে, জঙ্গলে একাধিক চিতাবাঘ আছে কি না।
বন দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে তাদের কাছে খবর আসে, বাঁকাদহ-জয়রামবাটি রাস্তার ধারে পচাডহরা এলাকায় একটি চিতাবাঘের দেহ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান বনকর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘ মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি চিতাবাঘের দেহটি উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বনবিভাগে নিয়ে যান বনকর্মীরা। শুক্রবার সেখানেই দেহটির ময়না তদন্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
চিতাবাঘের দেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় বাঘের আতঙ্ক চেপে বসেছে। এমনিতেই বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ রেঞ্জ এলাকায় হাতির উপদ্রুত লেগেই রয়েছে। তার উপর এ বার বাঁকাদহের জঙ্গলে চিতাবাঘের উপস্থিতি! পচাডহরা গ্রামের বাসিন্দা উত্তম পাত্র বলেন, ‘‘আমাদের গ্রাম পুরোপুরি জঙ্গলে ঘেরা। বাড়ির ছোট ছোট ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে মহিলারা সকাল হলেই পাতা ও কাঠ সংগ্রহ করতে জঙ্গলে যায়। ভয় তো লাগবেই।’’ আর এক বাসিন্দা অনুপ পাত্র বলেন, ‘‘একটি চিতাবাঘ গাড়ির ধাক্কায় মারা গিয়েছে। শোনা যাচ্ছে, ওর সঙ্গে আর একটি চিতাবাঘ ছিল। সেটি আপাতত জঙ্গলেই রয়েছে। বন দফতর ওই চিতাবাঘটিকে ধরলে আমরা নিশ্চিন্ত হতে পারতাম।’’
বন দফতর অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি। তবে বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক বিশ্বরঞ্জন ধুঁয়া বলেন, ‘‘চিতাবাঘ সাধারণত মানুষকে আক্রমণ করে না। জঙ্গলের ছোট-বড় প্রাণী শিকার করেই তাদের খাবারের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। তাই এলাকাবাসীর এত আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’