মৃতদের তালিকায় ছিলেন কাজি সাহিদুল রহমান এবং তাঁর স্ত্রী মর্জিনা বিবি। নানুরের বাসিন্দা সাহিদুল স্ত্রীকে নিয়ে বগটুইয়ে শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। —ফাইল চিত্র।
বছর ঘুরে গিয়েছে। এখনও মৃত্যুর শংসাপত্র হাতে পায়নি কাজি সাজিদুর রহমানের পরিবার। মেলেনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি মতো আর্থিক সাহায্য এবং চাকরিও। ছেলে এবং বৌমার মৃত্যুর এক বছর পরেও তাঁরা বিচার পাননি। শাড়ির আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে একগুচ্ছ অভিযোগ নূর নিহার বিবির।
২০২২ সালের ২১ মার্চ। বীরভূমের রামপুরহাট থানার বগটুই গ্রামে ঘটে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। বড়শাল গ্রামের উপপ্রধান ভাদু শেখের খুনের পর সব মিলিয়ে প্রাণ হারান ১০ জন। মৃতদের তালিকায় ছিলেন কাজি সাহিদুল রহমান এবং তাঁর নববিবাহিত বধূ মর্জিনা বিবি। নানুরের দান্য গ্রামের বাসিন্দা সাহিদুল স্ত্রীকে নিয়ে বগটুইয়ে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন।
ওই মৃত্যুর ঘটনার পর বীরভূমে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারির নির্দেশের পাশাপাশি মৃত এবং আহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু এক বছর ঘুরে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি দাবি মৃত সাহিদুলের পরিবারের।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকার চেক এবং একটি করে সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সহিদুলের মায়ের কথায়, ‘‘ছেলের মৃত্যুর টাকা এসেছে। একটা চাকরি হয়েছে। তবে বৌমার মৃত্যুতে কোনও ক্ষতিপূরণ কেউ (মর্জিনা বাপের বাড়ির লোকজন) পাইনি।’’ শুধু তাই নয়, ছেলে এবং বৌমার মৃত্যুর শংসাপত্রও তাঁদের হাতে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধা। তিনি বলেন মৃত্যুর শংসাপত্রের জন্য জেলাশাসককে একাধিক বার লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া আরও সহযোগিতা মেলেনি। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘ছেলের মৃত্যু শংসাপত্র না পাওয়ায় খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ব্যাঙ্কের টাকা তোলা থেকে কোনও কিছুই হচ্ছে না। এই এক বছরে তো প্রশাসনের কেউ খোঁজও নিল না!’’
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি বলেন, ‘‘সার্টিফিকেট পেতে বেশ কিছু সমস্যা হয়েছে। আমরা সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘যে হেতু পুড়ে মারা যাওয়ার পর দেহ একেবারেই চেনা যাচ্ছিল না, তাই এ রকম সমস্যা হয়েছে। আর টাকা এবং চাকরির বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি নিশ্চয়ই এই বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy