Advertisement
E-Paper

‘কাটমানি’ ফেরত চাই, বিক্ষোভ জারি

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ সাঁইথিয়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের যুব সভাপতি কৃষ্ণগোপাল দাসের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৯ ০২:০৩
প্রতিবাদী: তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও। সাঁইথিয়ায়। —নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদী: তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও। সাঁইথিয়ায়। —নিজস্ব চিত্র

সকালে সাঁইথিয়া। রাতে বোলপুর। ‘কাটমানি’ অভিযোগে ফের সরব সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার সকালে সাঁইথিয়া শহরে এক যুব তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘিরে এবং রাতে বোলপুরে, দুবরাজপুরের বিধায়ক নরেশ বাউড়ির কার্যালয় ঘেরাও করে ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন কিছু উপভোক্তা। বুধবার একই ঘটনা ঘটেছিল ইলামবাজারে। গ্রাম ছাড়িয়ে এ বার বিক্ষোভের আঁচ পড়তে শুরু করেছে শহরেও।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ সাঁইথিয়া পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের যুব সভাপতি কৃষ্ণগোপাল দাসের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বিক্ষোভ চলাকালীন বাসিন্দারা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘কাটমানি ফিরিয়ে দিতে হবে। না হলে আন্দোলন জারি থাকবে।’ এ দিনই সন্ধ্যায় ইলামবাজারের ধীবরপাড়ায় এক তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তাঁদেরও অভিযোগ, আবাস যোজনা থেকে শুরু করে ১০০ দিন কাজের প্রকল্পের ‘কাটমানি’ নিয়েছেন ওই নেতা। আর রাতে খোদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুকে, বিধায়ক তথা বোলপুরের উপ-পুরপ্রধান নরেশ বাউড়ির কার্যালয় ঘেরাও করে রাতে বিক্ষোভ দেখান কিছু উপভোক্তা। তাঁরা আবাস যোজনার জন্য দেওয়া টাকা ফেরতের দাবি জানান। নরেশবাবু নিজে অবশ্য এ দিন ছিলেন কলকাতায় এমএলএ হস্টেলে।

সাঁইথিয়ায় বিক্ষোভকারীদের এক জন, খগেন দাস অভিযোগ করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো সরকারি প্রকল্পে বাড়ি দেওয়ার জন্য কাটমানি নিয়েছেন কৃষ্ণগোপাল। এই এলাকায় যাঁদের বাড়ি তৈরি হয়েছে, সকলের কাছ থেকেই যেমন খুশি টাকা নেওয়া হয়েছে। আমার কাছেও ৪০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন।’’ তাঁর দাবি, গরু বিক্রি করে প্রথমবার তিনি কুড়ি হাজার টাকা দেন। পরের বার স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে এবং ঋণ নিয়ে বাকি ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন।কিন্তু এখনও তাঁর বাড়ির কাজ শেষ হয়নি। ওই আয়্রেডর বাসিন্দা অনিমা সূত্রধর, প্রতিবন্ধী মানিক দাস বা প্রবীণ নাগরিক দেবু দাসদের অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতা তাঁদের মতো অনেকের কাছ থেকে ১৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। কেউ দিতে অস্বীকার করলে বাড়ি অন্য কাউকে ‘পাইয়ে দেওয়া’ হবে বলে ভয় দেখানো হয়েছে। ফলে সকলেই টাকা দিয়েছেন। ওই এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও বিক্ষোভকারীদের দাবি।

বিক্ষোভ, স্লোগানের খবর পেয়ে কৃষ্ণগোপালের বাড়ির সামনে যান ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মানস সিংহ। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্বাস দেন, আলোচনায় বসে বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়া হবে। এর পরে বিক্ষোভ ওঠে। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে অবশ্য এ দিন এলাকায় পাওয়ায় যায়নি। তাঁর সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মোবাইলও বন্ধ রয়েছে। মানসবাবু অবস্য এই বিক্ষোভের পিছনে বিজেপি-র ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলের কেউ কখনওই কারও কাছ থেকে টাকা দাবি করিনি। এটা বিজেপি-র চক্রান্ত। স্থানীয় মানুষদের বিভ্রান্ত করে উস্কে

দেওয়া হচ্ছে।’’ বিধায়ক নমরেশবাবুরও দাবি, ‘‘বোলপুরের বিক্ষোভের পিছনে সিপিএম-বিজেপি রয়েছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি-র সাঁইথিয়া মণ্ডলের সভাপতি ভবানীশঙ্কর পালের দাবি, ‘‘এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা সকলেই উপভোক্তা। তাঁরা ঘর পেয়েছেন বা পাবেন। তাঁদের ঘরের জন্য তৃণমূলের নেতাদের হাতে হয়তো টাকা দিতে হয়েছে তাই এই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এখানে বিজেপির কোনও নেতা উপস্থিত ছিলেন না। তাই এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

সাঁইথিয়ার পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত জানান, তিনি কলকাতায় রয়েছেন। ফিরে বিশদে খোঁজ নেবেন। তৃণমূলের শহর সভাপতি পিনাকীলাল দত্ত বলেন, ‘‘যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং সকলকেই আলোচনায় ডাকা হয়েছে। আমরা তাঁদের মুখেই তাঁদের অভাব অভিযোগের কথা শুনব। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পরেই দলের তরফে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Sainthia Bolpur Cut Money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy