রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় পিস্তলের নলের ডগায় এক দল ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লুটপাট চালাল সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বরাবাজারের আগাঝোর গ্রামের অদূরে মানবাজার-বরাবাজার রাস্তার উপর। দুষ্কৃতীদের ছুরির আঘাতে জখম এক ব্যবসায়ীর চিকিৎসা চলছে মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
এদিন সকালে মানবাজার পাথরকাটা গ্রাম থেকে আট ব্যবসায়ী একটি গাড়িতে বলরামপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁদের কয়েকজনের বাড়ি বাঁকুড়ায়। পাথরকাটায় এক আত্মীয়ের বাড়ি এসেছিলেন তাঁরা।
মানবাজার-বরাবাজার রাস্তায় সিন্দরি বাজার পেরবার পরই ব্যবসায়ীরা লক্ষ্য করেন তাঁদের গাড়িকে ধাওয়া করছে আরেকটি গাড়ি। পরের ঘটনাক্রমের বর্ণনা দিয়েছেন শেখ আরমান নামে এক ব্যবসায়ী। তাঁর কথায়, ‘‘সিন্দরি বাজার পেরবার পরই ফাঁকা একটা জায়গায় আমাদের অতিক্রম করে রাস্তার উপরই তেরছা ভাবে দাঁড়িয়ে পড়ে ওই গাড়িটি। আমরাও গাড়ি থামাতে বাধ্য হই। এরপর যা হয়েছে তা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়।’’
আরমানের বর্ণনা অনুয়ায়ী, সামনের গাড়িটি থেকে বেরিয়ে আসে কয়েকজন যুবক। তাদের কয়েকজনের হাতে ছিল পিস্তল। দু’জনের হাতে ছুরি। ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘তড়িৎগতিতে কয়েকজন আমাদের গাড়ির চালককে টেনে হিঁচড়ে ওদের গাড়িতে তোলে। বাকিরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে আমাদের গাড়িতে উঠে পড়ে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘একজন চালকের আসনে বসেই গাড়ি ঘুরিয়ে ফের মানবাজারের দিকে ছুটিয়ে দেয়। অন্যেরা আমাদের কোলে-ঘাড়ে চেপে বসেছিল। আমাদের নড়াচড়ার সুযোগ ছিল না।’’
রাস্তাতেই ব্যবসায়ীদের কপালে আগ্নেয়াস্ত্র ধরে তাঁদের সব টাকা লুঠ করে দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের বাধা দিয়ে গেলে শেখ সইদুল নামে এক ব্যবসায়ীর পায়ে ছুরি মারে এক দুষ্কৃতী। গোটা অপারেশনটা চলে রাস্তাতেই।
আরমান জানান, গাড়িটি সিন্দরি বাজার ঢোকার আগে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পিছনে এসে দাঁড়ায় দুষ্কৃতীদের গাড়িটি। সেই গাড়িতে চড়ে উধাও হয়ে যায় তারা। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাঁদের থেকে মোট ১১ লক্ষ টাকা লুঠ করা হয়েছে।
দুষ্কৃতীরা চম্পট দেওয়ার পর ওই ব্যবসায়ীরা ফোন করে বাড়ির লোকজনদের ঘটনার কথা জানান। পাথরকাটা গ্রামের গাড়ি ব্যবসায়ী শেখ পাপ্পু বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জেনেই পরেই আমরা পুলিশকে খবর দিই।’’ সইফুল বলেন, ‘‘আমি ব্যবসার কাজে পাথরকাটা গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলাম। এমন ঘঠনা ঘটবে তা কল্পনাতেও ছিল না।’’
পুলিশ জানিয়েছে, একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দুষ্কৃতীদের ব্যবহৃত গাড়িটির নম্বর পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু সেটি আসল কি না তা নিয়ে ধন্ধ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy