নজরে: বিশ্বভারতী। নিজস্ব চিত্র
আবাসিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবং অবাঞ্ছিত বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ন্ত্রিত করতে হস্টেলে সিসিটিভি বসিয়ে নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
তারই প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর পূর্বপল্লি ছাত্রাবাসে বসল সিসিটিভি ক্যামেরা। বিশ্বভারতীর সূত্রের দাবি, আগামী দিনে একই ভাবে অন্য হস্টেলগুলিতেও সিসিটিভি বসানো হবে। হস্টেলের শুধু মাত্র প্রবেশ-বাহির পথে থাকবে সিসিটিভি। কারা, কখন ঢুকছে-বেরোচ্ছে সে দিকে নজর রাখবে কর্তৃপক্ষ। নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রাথমিক ভাবে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম-ডান প্রতিটি ছাত্র সংগঠনই।
দিন কয়েক আগেই পূর্বপল্লি হস্টেলে ঢুকে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল টিএমসিপি এবং কিছু বহিরাগতদের বিরুদ্ধে। তাতে নাম জড়িয়েছিল বিশ্বভারতীর শিক্ষক গৌতম সাহার। ঘটনার প্রতিবাদে মিছিলে যোগ দেওয়ার পরেও শাসকদলের ওই ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে ফের বাম ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। এমনকী, এক ছাত্রীকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হয় বলেও অভিযোগ। টিএমসিপি অবশ্য সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছিল। মামলা গড়িয়েছে থানা অবধি। বাম ছাত্র সংগঠনগুলি থানায় এফআইআর করলে পাল্টা মারধরের অভিযোগ জানায় টিএমসিপিও। ঘটনার তদন্ত করলেও পুলিশ কাউকে ধরেনি।
এ দিকে, ওই হস্টেল-কাণ্ডের পরেও আবাসিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা রক্ষী এবং বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও হস্টেলের ভিতরে কী করে এমন ঘটনা ঘটছে, তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল পড়ুয়াদের একাংশ। আশ্রমে শান্তি ফেরানোর দাবিতে মিছিল করে কর্মিসভাও। ঘটনার পরপরই পরিচয়পত্র দেখে আবাসিকদের হস্টেলে প্রবেশের নির্দেশ দেন কতৃপক্ষ। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোয় নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত হল বলেই কর্তৃপক্ষের দাবি। ওই ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন বিশ্বজিৎ হালদার বলেন, “এটা আমাদের দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনার মধ্যে ছিল। বাস্তবায়িত হতোই। তবে সাম্প্রতিক কালের ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরা দ্রুত বসানোর ক্ষেত্রে হয়তো অনুঘটকের কাজ করেছে।”
প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষে জামশেদ আলি খান এবং অচিন্ত্য বাগদি বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল। কর্তৃপক্ষ তা মানায় আমরা খুশি।’’ আবার বাম ছাত্র সংগঠন এআইএসএ-র পক্ষে বিশ্বভারতীর ইউনিট সম্পাদক ফারহান হোসেন খান বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা এক জিনিস, আর নজরদারি চালানো অন্য বিষয়। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি।’’
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অমিত হাজরা জানান, শুধু পূর্বপল্লিই নয়, খুব তাড়াতাড়িই তাঁরা শ্রীনিকেতনে নতুন চালু হওয়া বয়েজ ও গার্লস হস্টেলেও সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর স্বপনবাবু বলেন, ‘‘বহিরাগতদের আনাগোনা রয়েছে কিনা, তা জানতে আমরা সিসিটিভি বসিয়েছি। ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’’ হস্টেলে মারধরের ঘটনার তদন্তে যে কমিটি কাজ করছে, তার রিপোর্ট কবে বেরোবে, তা অবশ্য বিশ্বভারতী এখনও জানাতে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy