Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
প্রশ্নে পুলিশের ভূমিকা

শিশু চুরিতে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার

ওই রাতেই থানায় শিশু চুরির অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল। সেই রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সস্ত্রীক শঙ্করকে আটক করা হয়। তার পরেও পুলিশ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৬
Share: Save:

শিশু চুরির অভিযোগে এক সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর ভাইকে গ্রেফতার করল বোরো থানার পুলিশ। রবিবার রাতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃত জাগদা গ্রামের শঙ্কর হাঁসদা বোরো থানার সিভিক ভলান্টিয়ার। অন্য জন হলেন তাঁর ভাই করুণাময় হাঁসদা। শিশু চুরিতে অভিযুক্ত শঙ্করের স্ত্রীও। তিনি বর্তমানে মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বৃহস্পতিবার পড়শির গোপাল মাহাতোর মাস খানেকের পুত্রসন্তানকে চুরির অভিযোগ ওঠে শঙ্করের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। গোপালের স্ত্রী গোলাপি মাহাতো ১৬ অগস্ট বারি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। বৃহস্পতিবার গোপালের মা খোঁকি মাহাতো নাতিকে নিয়ে বাড়িতে একা ছিলেন। অভিযোগ, ছুতো করে তাঁকে বাইরে পাঠিয়ে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যান ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের স্ত্রী। পরে চেপে ধরলে দাবি করেন, শিশুটি তাঁর। ওই দিনই জন্মেছে। পড়শিরা তাঁকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানে প্রসব সংক্রান্ত কোনও নথি পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে প্রসব সংক্রান্ত কোনও প্রমাণও পাননি। স্থানীয় বাসিন্দারাই তখন শিশুটিকে গোলাপির হাতে তুলে দেন।

ওই রাতেই থানায় শিশু চুরির অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল। সেই রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সস্ত্রীক শঙ্করকে আটক করা হয়। তার পরেও পুলিশ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। রবিবার চাইল্ড লাইনের তিন জন প্রতিনিধি এলাকায় যান।

জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর অশোক মাহাতো বলেন, ‘‘ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিবারের বিরুদ্ধে শিশু চুরির মতো গুরুতর অভিযোগ থাকলেও এই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা আমাদের বিস্মিত করেছে।’’ অশোকবাবুর দাবি, এলাকায় গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন, পুলিশ নাকি প্রথমে শিশু চুরির অভিযোগ নিতে চায়নি। বৃহস্পতিবার রাতে শতাধিক বাসিন্দা থানায় বিক্ষোভ দেখান। তার পরে অভিযুক্তদের আটক করা হলেও গ্রেফতার করা নিয়ে গড়িমসি চলছিল।

চাইল্ড লাইনের সদস্য তুষার ত্রিপাঠি বলেন, ‘‘চাইলেও অভিযোগের কপি আমাদের দেওয়া হয়নি। এমনকী পুলিশ এই মামলায় কোন কোন ধারা দিয়েছে তাও আমাদের জানাতে চায়নি।’’ চাইল্ড লাইনের সদস্যরা জানান, যে শিশু মায়ের দুধ খায় তাকে দীর্ঘক্ষণ মায়ের কাছ ছাড়া করে রাখাটা খুবই ঝুঁকির। বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই ব্যাপারে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তমানবাজার ২ ব্লক সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতো বলেন, ‘‘পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল।’’

তবে পুলিশের দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘তথ্য, সাক্ষ্য, প্রমাণ এই সমস্ত জোগাড় করতে একটু সময় লেগেছে।’’ চাইল্ড লাইনের সদস্যদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, অভিযোগকারী ছাড়া অন্য কাউকে অভিযোগের প্রতিলিপি দেওয়ার নিয়ম নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE