Advertisement
E-Paper

অটো-টোটো খণ্ডযুদ্ধ, প্রশ্নে প্রশাসন

হাতে মোটা মোটা বাঁশ। তাই দিয়েই চলল বেদম মার। শুক্রবার দুপুরে পুলিশের সামনেই দু’ঘণ্টা ধরে রামপুরহাট শহরে তাণ্ডব চালালেন একদল অটো ও টোটো চালক। আহত হলেন দু’পক্ষেরই লোক জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ০২:০৬
এ ভাবেই বাঁশ হাতে শহরের রাস্তা দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেল চালকদের একাংশকে। (ডিন দিকে) পুলিশের সামনেই লাঠি হাতে জড়ো হয়েছে অন্য পক্ষ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

এ ভাবেই বাঁশ হাতে শহরের রাস্তা দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেল চালকদের একাংশকে। (ডিন দিকে) পুলিশের সামনেই লাঠি হাতে জড়ো হয়েছে অন্য পক্ষ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

হাতে মোটা মোটা বাঁশ। তাই দিয়েই চলল বেদম মার।

শুক্রবার দুপুরে পুলিশের সামনেই দু’ঘণ্টা ধরে রামপুরহাট শহরে তাণ্ডব চালালেন একদল অটো ও টোটো চালক। আহত হলেন দু’পক্ষেরই লোক জন। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এল পরিস্থিতি। পরে থানায় বসে তৃণমূলেরই অটো ও টোটো সংগঠনের মধ্যে আলোচনা করে আপাতত সমস্যা মেটাল। যদিও প্রশ্নটা রয়েই গেল? শহর এবং লাগোয়া এলাকায় চলা বেআইনি অটো ও টোটো রুখতে জেলা পরিবহণ দফতর চুপ কেন? পুলিশই বা গোটা বিষয়টিকে কার্যত না দেখার ভান করছে কেন? জেলার সহকারী আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক মানস হালদার বলছেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন শহরে যে সব টোটো চলছে, তার বেশির ভাগই বেআইনি। আমরা শো-রুমগুলিকে চিঠি দিয়েছি, যাতে বিধি মেনে অফার লেটার, সিল লেটার ও টেস্ট সার্টিফিকেট নিয়ে টোটো বিক্রি করা হয়। প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’

ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন?

এ দিন রামপুরহাট থেকে যাত্রী নিয়ে তারাপীঠে গিয়েছিলেন এক টোটো চালক। তাতেই আপত্তি জানায় শহরের তৃণমূল পরিচালিত অটো চালক সংগঠন। সেই থেকে দুই সংগঠনের মধ্যে শুরু হয় ঝামেলা। ওই টোটো চালক রামপুরহাটে ফিরে স্টেশন চত্বরে একটি হোটেলে খাবার খাচ্ছিলেন। শহরের তৃণমূল পরিচালিত টোটো সংগঠনের অভিযোগ, তখনই অটো চালকেরা তাঁকে বেদম মারধর করে। প্রায় দাবানলের মতো ছড়ায় সে খবর। প্রতিবাদে রামপুরহাটের সানঘাটা মোড়ে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন টোটো চালকেরা। সেখানকার অটো চালকদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছলে পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়। কিন্তু, সেখান থেকে হটে গিয়ে টোটো চালকেরা তখন চলে আসেন পুরসভা মাঠে। খবর আসে শহরের গণেশ মন্দিরের সামনে অটো চালকেরা আরও এক টোটো চালককে মারধর করছেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এর পরে টোটো চলকেরা অনেকেই সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে বাঁশের লাঠি নিয়ে শহরের পাঁচমাথার মোড়ের দিকে আসেন। তখন অনেক অটোই যাত্রী নিয়ে তারাপীঠের দিকে যাচ্ছিল। তার চালকেরা প্রাণের ভয়ে যাত্রী নিয়েই ফের স্টেশনের দিকে পালিয়ে যান। এ বারে স্টেশনের দিক থেকে অটো চালকেরাও পাল্টা লাঠিসোটা নিয়ে পাঁচমাথায় হাজির হয়। বহু চেষ্টায় ঘণ্টা দু’য়েক পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে রামপুরহাট থানার পুলিশ।

অটো মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রেকিবের দাবি, টোটো চালকেরা প্রথমে তাঁদের চালকদের মারধর করে। সে থেকেই ঝামেলা। শহরের টোটো ইউনিয়নের সভাপতি প্রিয়নাথ (টিঙ্কু) সাউ সেই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘ওরাই প্রথমে আমাদের এক চালককে মেরেছে। তার জন্যই কেউ কেউ উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল।’’ অবশ্য কোনও পক্ষই এ দিন থানায় লিখিত অভিযোগ জানায়। দু’জনেরই দাবি, তাঁরা থানায় বসে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছেন। অন্য দিকে, পরিবহণ দফতরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রিয়নাথবাবু এ দিন বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতর আমাদের চিঠি দিয়ে ডেকেছিল। আমারা কর্তাদের বসে দিয়েছি, বৈধতা পেতে আমরা সব কিছু করতে রাজি।’’ তাঁর অভিযোগ, শুধু টোটো কেন, শহরে বহু অটোও বেআইনি ভাবে চলছে। সেগুলিও পরিবহণ দফতর দেখুক বলে তিনি দাবি করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি পরিবরণ দফতর দেখছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ দিকে, রামপুরহাটের নতুন মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘অতি শীঘ্রই আমরা ব্যবস্থা নেব। শহরে সিসিটিভি লাগিয়ে আমরা টোটোগুলি অনওয়েতে চালানোর ব্যবস্থা করব। প্রত্যেক টোটো চালককে নির্দিষ্ট রুটে চালাতে হবে।’’

auto toto Rampurhat Birbhum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy