যত দিন যাচ্ছে টলিউডের অভিনেত্রী সোমা বাগের সম্পর্কে প্রতারণার নিত্য নতুন অভিযোগ সামনে আসছে।
এ বার পুরুলিয়ার ললিতকুমার ঠক্কর নামে এক বাসিন্দাও তাঁর কাছ থেকে দু’দফায় নয় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগ তুললেন সোমা বাগ ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে।
সিনেমা তৈরির নামে পুরুলিয়ার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি টাকা নিয়ে প্রতারণার মামলায় কলকাতা পুলিশ সম্প্রতি সোমা বাগ ওরফে মিত্তলকে গ্রেফতার করে। তবে তার আগেও ওই ব্যবসায়ী পরিবারের কাছে ইট ব্যবসায় লগ্নি করার জন্য প্রচুর টাকা নেওয়ার অভিযোগে পুরুলিয়া সদর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ওই ব্যবসায়ী আশিস সুরেখা ওই মহিলার বিরুদ্ধে এই জোড়া অভিযোগের কথা শুনিয়েছেন। সে দিনই পুরুলিয়ার সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোও অভিযোগ তোলেন, ইটের ব্যবসার জন্য তিনিও ওই মহিলার কাছে টাকা পান। তিনি অবশ্য কোথাও অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে টাকা নিয়ে ললিতকুমারকে চেক দিয়েছিলেন সোমা। কিন্তু সেই চেকের সই ব্যাঙ্ক জানিয়েছে জাল। এমনই অভিযোগ তাঁর। এ নিয়ে তিনিও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আনাজ ব্যবসায়ী ললিতবাবুর জানাচ্ছেন, সোমার শ্বশুরের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। সেই সুবাদে সোমার স্বামী আশিস ঘোষের সঙ্গেও তাঁর সখ্যতা ছিল। আশিস তাঁকে জানিয়েছিল, তিনি ইঞ্জিনিয়ার। রাঁচীতে তাঁর প্রোমোটিং-এর কাজ চলছে। সেই ছবি দেখিয়ে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি আশিসবাবু তাঁর কাছে সাহায্য হিসেবে টাকা চেয়েছিলেন।
তাঁর অভিযোগ, ‘‘পরিচিত এবং বিশ্বাসভাজন বলে আশিসবাবুকে আমি ছয় লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। তার কিছুদিন পরে সোমাও একদিন আমাকে বলেন তাঁর লাখ তিনেক টাকার প্রয়োজন। বদলে তিনি পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে একটি জমির কাগজপত্র আমাকে রাখতে বলেন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এতটাই বিশ্বাসভাজন ও পরিচিত ছিলেন ওঁরা দু’জনে, যে ওই সব নথি খতিয়ে দেখার প্রয়োজনই মনে করিনি। আমার কথা মতো ওঁরা ‘অ্যাকাউন্ট পেয়ি’ চেকও দিয়েছিলেন। পরে সেই চেক ভাঙাতে পুরুলিয়ার একটি ব্যাঙ্কে গেলে জানতে পারি চেকের সই জাল! আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।’’
ললিতবাবু জানান, চেকের সই জাল জানার পরে তিনি আশিসবাবুর কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে আশিসবাবু হটিয়ে দেন বলে অভিযোগ। তাঁর কথায়, ‘‘ও আমাকে যা বলেছিল, তার অর্থ দাঁড়ায় টাকার কথা আমাকে ভুলে যেতে হবে। তখন বাধ্য হয়েই আমি পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করি।’’ তবে আশিস সুরেখার মতো তিনিও অভিযোগ তুলেছেন, পুরুলিয়ার পুলিশও তাঁর অভিযোগ নিয়ে সে ভাবে তদন্ত করেনি।
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, এই মামলায় আদালত থেকে অভিযুক্তেরা জামিনে মুক্ত রয়েছেন। পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুরুলিয়া সদর থানায় দু’টি মামলায় সোমা বাগ বা সোমা ঘোষ নামে এই মহিলা অভিযুক্ত রয়েছেন। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy