পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনের পক্ষে সওয়াল করলেন সমিতির জেলা সভাপতি গৌতম দাস। তাঁর মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে শিক্ষামহলে।
বুধবার শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনের বাঁকুড়া শহর এবং বাঁকুড়া-১ ব্লকের যৌথ সম্মেলনে সম্মেলন হয়। সেখানে বক্তৃতা করার সময় গৌতম বলেন, “বহু শিক্ষক টিউশনে ছাত্র টানতে বিজ্ঞাপন দেন। আমরা এই ঘটনাকে সমর্থন করি না। যদি টিউশন করতেই হয়, তাহলে বিনা পয়সায় গরিব ছাত্রছাত্রীদের পড়ান।”
সরকারি এবং সরকার পোষিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শিক্ষার অধিকার আইন বলবৎ হওয়ার পর সরকারি শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধে কড়া হয়েছে রাজ্যও। অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও বহু সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষকেরা প্রাইভেট টিউশন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
গৌতমের বক্তব্যে শিক্ষামহলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন নিষিদ্ধ জেনেও শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা কী ভাবে ওই মন্তব্য করেন। বিতর্কের প্রেক্ষিতে গৌতমের সাফাই, ‘‘গরিবদের নিখরচায় শিক্ষা দেওয়ার কথাই আমি বলতে চেয়েছি। এটা সমাজসেবামূলক কাজ।’’
গৌতমবাবুর যুক্তি অবশ্য মানতে রকাজি নন বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র বাঁকুড়া জেলা সহ-সম্পাদক আশিস পাণ্ডে। তাঁর বক্তব্য, “এখন স্কুলে পড়াশোনা হয় না। বাধ্য হয়েই পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা স্কুলের শিক্ষকদের কাছেই পড়তে পাঠান ছেলেমেয়েদের। শিক্ষকদের টিউশন পড়ানো বন্ধ করে দিলে বিক্ষোভ শুরু হবে। এই আঁচ পেয়েই এমন মন্তব্য করেছেন গৌতমবাবু।” যদিও গৌতমবাবুর পালটা বক্তব্য, “আমরা শিক্ষকদের টিউশন পড়ানোর বিরুদ্ধে। একশ্রেণির শিক্ষকদের ফাঁকিবাজিতে বাম আমলে স্কুলগুলিতে শিক্ষা ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে কর্মসংস্কৃতি ফিরে এসেছে।”
সম্প্রতি স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনের অনুমতি দিতে হবে, এই দাবি তুলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে একদল স্কুলপড়ুয়া। ওই ঘটনার পর গৃহশিক্ষকদের সংগঠন অভিযোগ তুলেছিল, ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে পড়ুয়াদের ব্যবহার করছেন প্রাইভেট টিউশনের সঙ্গে যুক্ত সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষকেরা।
বহু স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাইভেট টিউশনে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠায় শিক্ষা দফতরের তরফে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy