করোনা সংক্রমণ এড়াতে মাস্ক পরার কথা প্রশাসন-চিকিৎসকদের তরফে বারবার বলা হলেও কান দিচ্ছেন না বাসিন্দাদের একাংশ। মাস্ক ছাড়া বেরোলে পুলিশের তরফে ধরপাকড়ও হচ্ছে। এ বার মাস্ক না পরলে অভিনব পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ। মাস্ক না পরায় যাঁদের আটক করা হচ্ছে তাঁদের কাছে থেকে মুচলেকা নেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের করোনা পরীক্ষাও করানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জেলার অধিকাংশ থানা এলাকায় পুলিশ পক্ষ থেকে এই বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে খবর। বৃহস্পতিবার সকালে সিউড়ির মসজিদ মোড় এলাকাতেও পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে মাস্ক না পরায় অন্তত ৬০ জনকে আটক করে সিউড়ি পুলিশ।
পুজোর আগে থেকে পুলিশ এই বিশেষ পদক্ষেপ করেছে। সিউড়ি, সাঁইথিয়া, সদাইপুর এবং মহম্মদবাজার— এই চারটি থানা এলাকা থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫০ জনকে আটক করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের কর্তাদের দাবি, ধৃতদের প্রথমে থানায় নিয়ে গিয়ে মুচলেকা নেওয়া হচ্ছে। তারপরেই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে করোনা পরীক্ষার জন্য। মুচলেকার সঙ্গে পুলিশ ধৃতদের নাম, ঠিকানা এবং ফোন নম্বর আগে থেকেই নিয়ে রাখছে বলে কারও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তাঁর সঙ্গে পুলিশ সহজেই যোগাযোগ করে নিতে পারছে। জেলা পুলিশের ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) দেবীদয়াল কুণ্ডু বলছেন, ‘‘পুজোর আগে থেকেই আমাদের এই অভিযান চলছে। আগামী দিনেও আমাদের এই অভিযান চলবে।’’ বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘যাঁদের পুলিশ নিয়ে আসছেন, তাঁদের অ্যান্টিজেন এবং আরটিপিসিআর দু’ভাবেই পরীক্ষা করার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
করোনা সংক্রমণ নিয়ে জেলা জুড়েই প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ এবং প্রশাসন। পুজোয় জনসমাগমের জেরে পুজোর পরে করোনা সংক্রমণের হার উর্দ্ধমুখী হওয়ার আশঙ্কাও করছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, এই অবস্থায় যত বেশি মাত্রায় করোনা পরীক্ষা করা হবে। তত বেশি আক্রান্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব। সংক্রমণে রাশ টানতে এটিও একটি অন্যতম উপায় হিসাবে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা পরীক্ষার জন্য জেলা জুড়েই ব্যবস্থা করছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু একটি বড় অংশের মানুষ পরীক্ষা করানোর ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করছেন। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের এই উদ্যোগে অনেকেরই পরীক্ষা করানো সম্ভব হচ্ছে।