গেঁথে: অস্ত্রোপচারের আগে করা এক্স-রে পরীক্ষার ‘প্লেট’। নিজস্ব চিত্র
খেলতে গিয়ে পাঁচ বছরের বালকের গলায় বিঁধে গিয়েছিল সাইকেলের একটি ‘স্পোক’। অস্ত্রোপচার করে সেটি বার করা হল পুরুলিয়া সদর হাসপাতালেই।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে বিবেক কুমার নামে ওই বালককে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে নিয়ে আসেন বাড়ির লোকজন। দেখা যায়, লম্বা একটি লোহার শিক তার গলায় গেঁথে রয়েছে। দ্রুত খবর পাঠানো হয় নাক, কান, গলা বিভাগের শল্য চিকিৎসক অমিতবিক্রম মাইতির কাছে। অমিতবাবু বলেন, ‘‘ছেলেটিকে যখন দেখি, ওর মুখ থেকে ক্রমাগত লালা ঝরছে। দেখে মনে হয়েছিল, ঘাবড়েও রয়েছে বেশ। বাড়ির লোকজনও খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন।’’ তিনি জানান, উপর থেকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল না শিকটা কতটা ভিতরে ঢুকে রয়েছে। এক্স-রে পরীক্ষায় দেখা যায় ভিতরে গেঁথে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘গলার ভিতরে আমরা যে অংশটাকে ন্যাজ়োফেরিংস বলি, মনে হল সেখানে ঢুকে রয়েছে।’’
চিকিৎসক জানান, দ্রুত অস্ত্রোপচার দরকার ছিল। এ দিকে, ছেলেটিকে বাড়ির লোকজন গোড়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন জয়পুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে ‘রেফার’ করায় সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এই সবের মাঝে বেশ কিছুটা সময় চলে গিয়েছিল। অমিতবাবু বলেন, ‘‘এক্স-রে দেখে বোঝা যাচ্ছিল, নাকের পিছনের অংশে শিকটা গেঁথে রয়েছে। ঠিক তার পরেই ব্রেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল, আর একটু গাঁথলেই প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে পারে।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বালকের পরিজনেরা বড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছিলেন। কিন্তু তাঁদের বোঝানো হয়, সেটা করতে গেলে আরও দেরি হয়ে যাবে।
অমিতবাবু জানান, দ্রুত সদর হাসপাতালেই অস্ত্রোপচার করা হয়। বার করে আনা হয় শিক। সেটি প্রায় ২ সেন্টিমিটার গেঁথে গিয়েছিল। জয়পুরের বারবেন্দা গ্রামের বাসিন্দা বিবেকের মা সুমিত্রা কুমার বলেন, ‘‘পাড়ার অন্য ছেলেদের সঙ্গে খেলছিল। হঠাৎ পড়শিদের চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখি, গলার মধ্যে লোহার শিক ঢুকে গিয়েছে।’’ বালকের বাবা চন্দন কুমার বলেন, ‘‘আমরা খুব গরিব। দিনমজুরির কাজ করে চলে। বাইরে কোথাও নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল না। ডাক্তারবাবুর কাছে
আমরা কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy