Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Social Boycott

Social boycott: দাবি মতো সংকীর্তনের চাঁদা দিতে অপারগ, নিঃসন্তান বিধবা বৃদ্ধাকে এক ঘরে করার ‘ফতোয়া’

নিজের চিকিৎসায় প্রচুর টাকা খরচ হয়ে যাওয়ায় ওই পরিমাণ চাঁদা দিতে পারেননি গ্রামের ৭৩ বছর বয়সি নিঃসন্তান বিধবা আদরি পাল। গ্রামেই থাকা নিজের ভগ্নিপতির মাধ্যমে ২০০ টাকা চাঁদা গ্রাম ষোলআনার কাছে পাঠান তিনি। বৃদ্ধা আদরী বলেন, ‘‘আমাকে গ্রামের দোকান থেকে সামগ্রী দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় চাল কল ও আটা কলেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ 

‘ফতোয়ার’ বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বৃদ্ধা।

‘ফতোয়ার’ বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বৃদ্ধা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২২ ১৬:৪১
Share: Save:

দাবি মতো সংকীর্তনের চাঁদা দেওয়া নিয়ে গ্রাম ষোলআনা কমিটির সঙ্গে বচসা হয়েছিল। তার জেরে দশ হাজার টাকা জরিমানার নিদান দিয়েছিল ষোলআনা। তা না দিতে পারায় বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থানার কোদালিয়া গ্রামের এক নিঃসন্তান বৃদ্ধাকে সামাজিক ভাবে বয়কট করার ‘ফতোয়া’ দিলেন গ্রামের মাতব্বররা। একই সঙ্গে তাঁর আত্মীয়ের এক পরিবারকে বয়কট করার নির্দেশ জারি করেছেন তাঁরা। এই ‘ফতোয়ার’ বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বৃদ্ধা। যদিও এই ফতোয়ার অভিযোগ মানতে চায়নি গ্রাম ষোলআনা।

বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থানার কোদালিয়া গ্রামে গত কয়েকদিন আগে হরিনাম সংকীর্তন শুরু হয়েছে। এই সংকীর্তনের জন্য মাস খানেক আগে থেকে গ্রামের প্রতিটি পরিবার থেকে চাঁদা আদায় শুরু করে গ্রাম ষোলআনা ( গ্রামে যাঁরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে)। পরিবারপিছু পাঁচশো টাকা চাঁদা ধার্য করা হয়।

নিজের চিকিৎসায় প্রচুর টাকা খরচ হয়ে যাওয়ায় ওই পরিমাণ চাঁদা দিতে পারেননি গ্রামের ৭৩ বছর বয়সি নিঃসন্তান বিধবা আদরি পাল। গ্রামেই থাকা নিজের ভগ্নিপতির মাধ্যমে ২০০ টাকা চাঁদা গ্রাম ষোলআনার কাছে পাঠান তিনি। বৃদ্ধা আদরী বলেন, ‘‘আমাকে গ্রামের দোকান থেকে সামগ্রী দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় চাল কল ও আটা কলেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’’

গ্রাম ষোলআনার সদস্য আলোক পাল বলেন, ‘‘সামাজিক বয়কট করার কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ওঁর ভগ্নিপতি গ্রাম ষোলআনার দুই সদস্যকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেন । তার জেরেই ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই জরিমানার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।’’

বাঁকুড়া সদরের মহকুমাশাসক সুশান্ত কুমার ভক্ত বলেন, ‘‘এই ঘটনা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপের জন্য ইতিমধ্যেই স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বিডিও-কে বলা হয়েছে। স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিককেও বিষয়টি জানিয়ে পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Social Boycott
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE