ডাইনি অপবাদে এক আদিবাসী মহিলাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। কালীপুজোর রাতে পুরুলিয়ার পাড়া থানার চাপুড়ি গ্রামে এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছে বলে খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম পদবী টুডু। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃতার ভাসুর-সহ আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার বাড়িতে কালীপুজোর জোগাড় করছিলেন পদবী। সেই সময় তাঁর ভাসুর হিটলার টুডু এবং জা জলেশ্বরী এসে পদবীকে টেনে নিয়ে উঠোনের পাশে নিয়ে যান। সেখানেই মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেখানেই তাঁকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেখানেই শেষ নয়। বাড়িতে থাকা শাবল দিয়ে পদবীর মাথায় আঘাত করা হয় বলেও অভিযোগ।
শাবলের আঘাতে গুরুতর আহত হন পদবী। উঠোনেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে ওই মহিলাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পাড়া থানার পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে।
আরও পড়ুন:
মৃতার স্বামী সুভাষ টুডুর অভিযোগ, ‘‘আমি কালীপুজোর ভোগের সামগ্রী কিনতে সন্ধ্যায় বাজারে গিয়েছিলাম। সেই সময় ডাইনি অপবাদে আমার স্ত্রীকে মারধর করেন আমার দাদা-সহ ৮-১০ জন। টাঙি, লাঠি ও শাবল দিয়ে আমার স্ত্রীকে মারধর করা হয়।’’ সুভাষের কথায়, ‘‘ঘটনার কথা জানতে পেরেই আমি বাড়িতে চলে আসি। কিন্তু আমাকে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। পরে গিয়ে দেখি আমার স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’’ অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সুভাষ।
একই অভিযোগ তুলেছেন সুভাষের বোন কুসুম মুর্মুও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমার বৌদিকে ডাইনি বলতে বলতে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। বাধা দিতে গেলে আমাদেরও মারধর করা হয়। হামলাকারী প্রত্যেকের হাতেই ধারালো অস্ত্র ছিল।’’ যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ধৃত জলেশ্বরী। তাঁর দাবি, পদবীকে ডাইনি অপবাদে মারধর করা হয়নি। তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। সেই সময়ই রাগের বশে পদবীর মাথায় আঘাত করা হয়। তাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করানো হয়।