Advertisement
E-Paper

চারশো টাকা ভাতায় কী হয়, বৃদ্ধার প্রশ্ন ডিএমকে

চারশো টাকার বিধবা ভাতায় কী হয়, বিশেষ করে যখন ছেলে-বৌমা টাকা দেওয়া দূর, খোঁজটুকুও রাখে না!— জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের উপস্থিতিতে এমনই প্রশ্ন ছুড়লেন আশি ছুঁইছঁই শেফালি নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:২৬
নম্বরের অপেক্ষায়। শুক্রবার মহম্মদবাজারের গণপুরে ‘জনতার দরবারে প্রশাসন’ কর্মসূচিতে ছবিটি তুলেছেন অনির্বাণ সেন।

নম্বরের অপেক্ষায়। শুক্রবার মহম্মদবাজারের গণপুরে ‘জনতার দরবারে প্রশাসন’ কর্মসূচিতে ছবিটি তুলেছেন অনির্বাণ সেন।

চারশো টাকার বিধবা ভাতায় কী হয়, বিশেষ করে যখন ছেলে-বৌমা টাকা দেওয়া দূর, খোঁজটুকুও রাখে না!— জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের উপস্থিতিতে এমনই প্রশ্ন ছুড়লেন আশি ছুঁইছঁই শেফালি নন্দী। শুক্রবার মহম্মদবাজারের গনপুর পঞ্চায়েতে আয়োজিত ‘জনতার দরবারে প্রশাসন’ এর শুরুতেই এমন প্রশ্ন শুনে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন অনেকেই। তখনই দেখা গেল নিজের নোটবুকে ওই অভিযোগ লিখে নিচ্ছেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহম্মদবাজারের গনপুর পঞ্চায়েতে এ দিন প্রদীপ জ্বালিয়ে জনতার দরবারে প্রশাসন এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। তিনি জানান, মহম্মদবাজার পিছিয়ে পড়া ব্লক। যোগাযোগের অভাবে এলাকার অনেক আদিবাসী সমাজের লোকজন সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। বিকাশবাবুর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসন এই কর্মসূচী নিয়েছে।’’ জেলাশাসক জানান, মূলত এলাকার আদিবাসী সমাজের মানুষজনের জন্য এ দিনের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের সর্বস্তরের আধিকারিক থেকে কর্মীরা সেখানে ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘অভাব অভিযোগ শোনার পর তাৎক্ষণিক সমস্যাগুলি সঙ্গে সঙ্গেই সমাধান করা হবে। সাত থেকে এক মাসের মধ্যে বাকি অভিযোগেরও সমাধান হবে।’’

তা জেনেই চলে এসেছিলেন শেফালিদেবী। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ শোনার জন্য একে একে মঞ্চে ডাকা হয়। প্রথমেই মঞ্চে আসেন বছরের শেফালীদেবী। এক কর্মী তাঁকে হাতে ধরে মঞ্চে তুলে নেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘ দিন আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। দুই ছেলের কেউ খেতে-পড়তে দেয় না। খোঁজটুকুও নেয় না।’’ বিধবা ভাতা বাবদ পাওয়া চারশো টাকায় তাঁর চলে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন। মঞ্চে তখন জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস, পুলিশ সুপার সুধীর কুমার, সদর মহকুমাশাসক অরুন্ধতি ভৌমিক, মহম্মদবাজারের বিডিও তারাশঙ্কর ঘোষ-সহ অন্য কর্তারা। শেফালীদেবীর অভিযোগের কথা শুনে তাঁরা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। ব্লকের এক কর্মী সবার অভাব অভিযোগ নোট করছিলেন। তারপরেও জেলাশাসককে শেফালীদেবী-সহ কয়েক জনের বক্তব্য লিখে নিতে দেখা যায়।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই অনুষ্ঠানে এ দিন প্রায় শ’দেড়েক মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। দু’শো জনকে তফশিলি উপজাতির ও ৪০ জনকে সংগঠিত শ্রমিকের শংসাপত্র দেওয়া হয়। ডামড়া ও গনপুর হাইস্কুলের মাধ্যমিকে কৃতি মেধাবীদের হাতে বই, এলাকার কয়েক’টি আদিবাসী ক্লাবকে খেলার সামগ্রী, মহিলা ফুটবলারদের হাতে বল, এবং অপুষ্টিতে ভোগা এগারো জন শিশুর মা-বাবার হাতে পুষ্টিকর খাদ্য তুলে দেন জেলাশাসক সহ উপস্থিত আধিকারিকরা। এলাকার দু’টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে লক্ষাধিক টাকার ঋণ দেওয়া হয়। দুটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তাঁদের তৈরি নানা সামগ্রী নিয়ে কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন। এ দিনের কর্মসূচি সফল হওয়ায় জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা গনপুরের উপপ্রধান গৌতম মণ্ডলের প্রশংসা করেন। জেলাশাসক জানান, আগামী দিনেও এমন কর্মসূচি নেওয়া হবে।

Elder woman DM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy