E-Paper

চিড়িয়াখানার বাঘিনির মূত্রে বাঘবন্দির চেষ্টা

বান্দোয়ানের ভাড়ারিয়া পাহাড়ের অদূরে যমুনাগোড়া গ্রামের কাছে বাঘের একাধিক পায়ের ছাপ মেলার পরে বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় চারটি খাঁচা পাতা হয়েছিল।

প্রশান্ত পাল 

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:২৯
যাতে লোকালয়ে না ঢুকে পড়ে বাঘ তার জন্য ভাড়ারিয়া পাহাড়ের এক পাশে নেট দিয়ে ঘোরা হচ্ছে।

যাতে লোকালয়ে না ঢুকে পড়ে বাঘ তার জন্য ভাড়ারিয়া পাহাড়ের এক পাশে নেট দিয়ে ঘোরা হচ্ছে। রাহামদা শবরপাড়া হয়ে কেন্দাপাড়া গ্রামের দিকে।ছবি- রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।

জঙ্গলে খাঁচা পাতা আর ছাগলের টোপ বাঁধাই সার হল। সে সব ছুঁয়েও দেখল না বাঘ। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় যে ফাঁদ ক্যামেরা রাখা হয়েছে, তাতেও কোনও ছবি ধরা পড়েনি। বন দফতর সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে বাঘিনির মূত্র আনা হয়েছে। বাঘকে আকৃষ্ট করার জন্য তা খাঁচাগুলির চারপাশে ছড়ানো হবে। ডিএফও (কংসাবতী দক্ষিণ) পূরবী মাহাতো জানান, বাঘ ধরতে নানা পদক্ষেপ করা হলেও এখনও কিছু কাজে আসেনি। তবে চেষ্টা চলছে।

বান্দোয়ানের ভাড়ারিয়া পাহাড়ের অদূরে যমুনাগোড়া গ্রামের কাছে বাঘের একাধিক পায়ের ছাপ মেলার পরে বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় চারটি খাঁচা পাতা হয়েছিল। রাখা হয়েছিল টোপও। তবে টোপ গেলা বা খাঁচায় ঢোকা দূর অস্ত, কাছাকাছিও আসেনি বাঘ। এ দিন সকালে রাইকা পাহাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে, যমুনাগোড়া গ্রাম লাগোয়া ভাড়ারিয়া জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ মেলে। ওই জঙ্গলেই যে বাঘ ঘাপটি মেরে রয়েছে, তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত বনকর্মীরা। জঙ্গলে খাঁচা পাতার পাশাপাশি তিনটি জায়গায় ছাগলের টোপ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, জঙ্গলের মধ্যে বাঘকে আটকে রাখতে রাহামদা গ্রাম থেকে কেন্দাপাড়া পর্যন্তজঙ্গলের মধ্যে কম-বেশি চার কিলোমিটার জুড়ে জাল দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ নেকড়া গ্রামের কাছে এক ব্যক্তি মোটরবাইকে যাওয়ার সময়ে বাঘটিকে রাস্তা পেরোতে দেখেন বলে দাবি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বনকর্মীরা। তল্লাশির পরে গ্রামের কিছু জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে।

গত রবিবার ঝাড়গ্রাম সীমানা পেরিয়ে বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলের আসার পরে থেকে বাঘের খোঁজ পেতে পায়ের ছাপই সম্বল বনকর্মীদের। বাঘ-বন্দি অভিযানে থাকা এক আধিকারিকের কথায়, “রেডিয়ো কলার না থাকা বাঘটিকে কী ভাবে ধরা যাবে, তা নিয়ে সে ভাবে কোনও পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না। কারণ, সূত্র বলতে শুধু তোপায়ের ছাপ।”

এই পরিস্থিতিতে বাঘটিকে ধরতে হলে এই জঙ্গলই আদর্শ বলে মনে করছেন বনকর্তারা। ঝাড়খণ্ডে ফিরলেও অসুবিধা নেই। তবে ভাড়ারিয়া জঙ্গল থেকে ফের রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলের গভীরে ঢুকে পড়লে, বাঘের হদিস পাওয়া মুশকিল হবে। পাশাপাশি রাইকা পাহাড়ের জঙ্গল থেকে বাঘটি মানবাজার ২ ব্লকের জঙ্গলেও গা ঢাকা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিপত্তি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

ডিএফও জানান, এ দিনও টাটকা পায়ের ছাপ মিলেছে। ফাঁদ ক্যামেরায় ছবি না মিললেও মনে করা হচ্ছে যমুনাগোড়া সংলগ্ন জঙ্গলেই বাঘ রয়েছে। জঙ্গলের বিস্তীর্ণ অংশ জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। ছাগলের টোপ দিয়ে পাঁচটি খাঁচাও পাতা হয়েছে। বাঘকে বাগে আনতে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা ছাড়া পথ নেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Banduan

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy