উপহার: পুরুলিয়া স্টেশন চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।
সোমবার রাতের সুনসান পুরুলিয়া স্টেশন। ছেঁড়া কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে রয়েছেন অনেক ফুটপাথবাসী। অন্ধকার ফুঁড়ে আচমকা স্টেশনের বাইরে এসে দাঁড়াল বেশ কয়েকটি গাড়ির কনভয়। একে একে নামলেন জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) উত্তমকুমার অধিকারী, পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস। সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের আরও কর্তাব্যক্তি। তাঁদের ঘিরে পুলিশকর্মীরা।
ঘুম ভেঙে অনেকে ভেবেছিলেন, কোনও অভিযান হবে। কাউকে গ্রেফতার করা হবে বুঝি। যেটা হল, তাতে অবাক সবাই। ফুটপাথে শুয়ে থাকা লোকজনকে ঘুম থেকে তুলে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা হাতে ধরিয়ে দিলেন চাল-ডালের প্যাকেট। এক এক জনের ঘুম ভাঙানো হচ্ছে। আর তিনি জেগে দেখছেন, তাঁকে ঘিরে অনেক লোকজন। জেলাশাসকের নির্দেশে সহকর্মী নয়না দে এগিয়ে গেলেন চাল-ডালের প্যাকেট নিয়ে। মাথার কাছে রেখে বললেন, ‘‘আজ বিশ্ব খাদ্য দিবস। তাই সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য চাল-ডালের এই প্যাকেট।’’ এই ভাবে স্টেশন চত্বরের আনাচে-কানাচে শুয়ে থাকা ফুটপাথবাসী ও ভিক্ষাজীবীদের হাতে চাল-ডালের প্যাকেট তুলে দেন তাঁরা।
ট্রেনে ভিক্ষে করেই দিন চলে, এ রকম তিন কিশোর চাল-ডালের-প্যাকেট পেয়ে ভারী অবাক। ঝগড়ু মালাকার নামে এক কিশোর বলে, ‘‘এই প্যাকেটের মধ্যে অনেকটা চাল-ডাল আছে। কিছুদিন চলবে।’’ পুরুলিয়া সদর থানার সামনেও কিছু ফুটপাথবাসী থাকেন। স্টেশন থেকে সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে কনভয়। পুলিশ সুপার নেমে তাঁদের জানান, ‘‘বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে এই উপহার।
জেলাশাসক পরে বলেন, ‘‘আমরা ঠিক করেছিলাম, ফুটপাথবাসীরা রাতে যখন ঘুমোবেন, তখনই তাঁদের কাছে গিয়ে চাল-ডাল দিয়ে আসব। এই ফুটপাতবাসীদের গীতাঞ্জলি প্রকল্প থেকে আমরা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছি।’’ তিনি জানান, যাঁদের জমি রয়েছে, তাঁরা নিজের জমিতে বাড়ি করবেন। আর যাঁদের জমি নেই, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোথাও জমি খুঁজে দেওয়া যায় কিনা দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy