বর্ষা বিদায়ের আগেই পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অর্কিড এবং ফার্নের খোঁজে জঙ্গলে নামতে চলেছে বন দফতর। অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে মাঠা রেঞ্জ অফিস চত্বরে অর্কিড পার্ক এবং ফার্নারি গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে পুরুলিয়া বন দফতর। জঙ্গলে পাওয়া অর্কিড ও ফার্ন পরে পার্কে রাখা হবে।
তাদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ। ওই বিভাগের শিক্ষক সুব্রত রাহা বলেন, ‘‘শুধু অর্কিডই নয়, বিভিন্ন প্রজাতির ফার্ন ওই পার্কে শোভা বাড়াবে।’’ তিনি জানান, বছর সাতেক ধরে তাঁরা অযোধ্যা পাহাড় থেকে শুরু করে পুরুলিয়ার বিভিন্ন জঙ্গলে সমীক্ষা চালিয়ে এখনও পর্যন্ত ২৮ প্রজাতির অর্কিড এবং ৩৫ প্রজাতির ফার্নের সন্ধান পেয়েছেন। বন দফতর এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, খুঁটিয়ে খুঁজলে এ জেলার জঙ্গলগুলিতে আরও কিছু অর্কিড এবং ফার্নের হদিস মিলতে পারে।
বন দফতর সূত্রে খবর, পার্কটি গড়ে তোলার প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে পুরুলিয়ার ডিএফও অঞ্জন গুহ এবং এডিএফও সায়নী নন্দীর উপস্থিতিতে পার্কের জায়গা মাপজোক করা হয়।
উত্তরবঙ্গের গজলডোবা ছাড়া এ রাজ্যে আর কোথাও অর্কিডের পার্ক নেই। যদিও গজলডোবার পার্কটি পর্যটন দফতরের অধীনে। সেই অর্থে বন দফতরের অধীনে এই পার্ক রাজ্যে প্রথম হতে চলেছে। উত্তরবঙ্গে কর্মরত থাকার সময় ডিএফও অঞ্জনের হাত ধরেই সেই পার্কের পথচলা শুরু হয়েছিল। তাঁর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাইছে বন দফতর।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, অর্কিড হচ্ছে রকমারি ফুলের পরিবার। সেখানে রঙিন এবং সুগন্ধযুক্ত ফুলের দেখা মেলে। বর্ষায় বেড়ে ওঠে, বাহারি ফুল দেয়। ফার্ন এক ধরনের অপুষ্পক উদ্ভিদ। এদের অবশ্য ফুল হয় না। এরা রেণু তৈরির মাধ্যমে বংশবিস্তার করে।
অভিনব এই পার্ক অযোধ্যা পাহাড়ের পর্যটন মানচিত্রে নতুন পালক জুড়বে বলে আশাবাদী বনকর্তারা। ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, ‘‘অর্কিড পার্ক কিছুটা অভিনব তো নিশ্চয়। তাই এ ব্যাপারে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে খুঁটিনাটি জানতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে পর্যটকদের কথা ভেবে দ্রুত যাতে পার্কটি গড়ে তোলা যায় সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)