Advertisement
E-Paper

বাস কম, হয়রান পুরুলিয়া

পেট্রো পণ্য ও অন্য জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রতিবাদে এ দিন ভারত বন্‌ধ ডেকেছিল কংগ্রেস ও বামদলগুলি। গোটা জেলায় সর্বাত্মক বন্‌ধ হয়েছে বলে এ দিন দাবি করেছেন কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২২
সুনসান পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড।

সুনসান পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড।

বামদলগুলি ও কংগ্রেসের ডাকা ভারত বনধে সোমবার পুরুলিয়ার বেশ কিছু জায়গায় সাড়া পড়ল। সোমবার বেসরকারি বাস কার্যত চলেনি জেলায়। ছোট গাড়িও বন্ধ ছিল। রাস্তায় বেরিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তবে ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। আদ্রা ডিভিশনের রেলকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কোথাও ট্রেন অবরোধ হয়নি।

পেট্রো পণ্য ও অন্য জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রতিবাদে এ দিন ভারত বন্‌ধ ডেকেছিল কংগ্রেস ও বামদলগুলি। গোটা জেলায় সর্বাত্মক বন্‌ধ হয়েছে বলে এ দিন দাবি করেছেন কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়। দু’জনেই বলেন, ‘‘বিজেপি-শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি আর তার জেরে পেট্রল ও ডিজেলের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার বিরুদ্ধে বন্‌ধ ডাকা হয়েছিল। মানুষ স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে
সাড়া দিয়েছেন।’’

প্রদীপ আরও বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় বন্‌ধে যোগ করা হয়েছিল গণতন্ত্র রক্ষার দাবি। মানুষের সমর্থন দেখেই বোঝা যাচ্ছে, পুরুলিয়ায় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে এ রাজ্যের শাসকদল।” তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি পাল্টা বলছেন, ‘‘সর্বভারতীয় ইস্যুতে বন্‌ধ ডেকে এমন হাস্যকর দাবি জুড়ছে সিপিএম। এর থেকেই বোঝা যায় পুরুলিয়ায় ওরা রাজনৈতিক ভাবে কতটা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।’’

এ দিন বন্‌ধ সফল করতে পুরুলিয়া, ঝালদা ও অন্য কিছু ব্লকে মিছিল করেছে কংগ্রেস। রঘুনাথপুর শহরে মিছিল শুরু করে এসইউসি। পুলিশ সেই মিছিল আটকানোয় কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়। সন্ধ্যায় বন্‌ধ সফল হয়েছে দাবি করে মিছিল করতে দেখা গিয়েছে
সিপিএম কর্মীদের।

বন্‌ধের ভাল প্রভাব পড়েছে পুরুলিয়া শহরে। হাতে গোনা কিছু দোকানপাট খোলা ছিল। ট্যাক্সিস্ট্যান্ড ও বাসস্ট্যান্ড ছিল সুনসান। পাড়ার মোড়ে সকালে কিছু দোকান খুললেও পরে বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় টোটো ছিল কম। প্রায় একই ছবি দেখা গিয়েছে ঝালদা, আড়শা, বাঘমুণ্ডি, কোটশিলা ও রঘুনাথপুর ২ ব্লকে। বন্‌ধের প্রভাব পড়েছে বলরামপুর, জয়পুর আর হুড়ার বিভিন্ন এলাকায়।

তবে রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় বন্‌ধের প্রভাব ছিল আংশিক। নিতুড়িয়া ব্লকের পারবেলিয়া এলাকায় কয়লাখনিগুলিতে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। প্রভাব পড়েনি নিতুড়িয়া, সাঁতুড়ি এবং পাড়ার ছোট-বড় কারখানাগুলিতেও।

সাঁওতালডিহির বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রঘুনাথপুরের ডিভিসির তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল স্বাভাবিক। বন্‌ধের কোনও প্রভাবই পড়েনি আদ্রা ও কাশীপুরে। তবে আদ্রা-কাশীপুর রুটে ছোট গাড়ি ছিল অন্য দিনের তুলনায় কম। মানবাজার মহকুমা এলাকায় বন্‌ধের প্রভাব ছিল মিশ্র। আবার মহকুমা সদর মানবাজার এবং পুঞ্চা এলাকায় দোকান-বাজার স্বাভাবিক ছিল। তবে রাস্তায় বাসের দেখা না মেলায় হয়রান
হয়েছেন অনেকে। পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে যোগাযোগে ভরসা বেসরকারি বাস আর ছোট গাড়ি। জেলা বাসমালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত জানান, এ দিন জেলার বেশিরভাগ বেসরকারি বাস রাস্তায় নামেনি। ঝাড়খণ্ড থেকে দূরপাল্লার বাসও জেলায় ঢোকেনি।

এ দিন ঝাড়খণ্ডের বোকারো যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরতে হয়েছে পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা রঞ্জিত কুমারকে। রঘুনাথপুর ১ ব্লকের কৃষি দফতরের কর্মী আনাড়ার বাসিন্দা সোমা বৈষ্ণব জানান, অফিসে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে অনেক ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে একটি সরকারি বাস পেয়েছেন। ফেরার সময়েও পথে ছিল একই ঝকমারি। মানবাজারের ডাহা গ্রামের অনিল মাহাতোর দাবি, খড়িদুয়ারা গ্রামে যেতে অটো ভাড়া দিতে হয়েছে তিন গুণ। বন্‌ধ ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি অফিসে কর্মীদের হাজিরা ছিল স্বাভাবিক।”

Strike Purulia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy