E-Paper

শুধু আশ্বাসই সার? প্রশ্ন নিরাপত্তা নিয়ে 

ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন সকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাকি স্বাস্থ্যকর্মীরা ‘নো সেফটি, নো ডিউটি’ স্লোগান তুলে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখান।

বাসুদেব ঘোষ 

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০২
স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিবাদ মিছিল। রবিবার ইলামবাজারে।

স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিবাদ মিছিল। রবিবার ইলামবাজারে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

আর জি করের ঘটনার পরেও অনেক আশ্বাস মিলেছে রাজ্য সরকারের তরফে। রাতে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী-সহ সকলের জন্য অ্যাপ তৈরির কথাও জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তার পরেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্তব্যরত নার্সের যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠার পরে নিরাপত্তা নিয়ে ক্ষোভ জানাচ্ছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা।

শনিবার রাতে ওই ঘটনার পর পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত রোগীকে। কেন হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে এত আশ্বাসের পরেও ইলামবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটল সেই প্রশ্ন তুলছেন নির্যাতিতা নার্স থেকে শুরু করে তাঁর সহকর্মী স্বাস্থ্যকর্মীরা।

ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন সকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাকি স্বাস্থ্যকর্মীরা ‘নো সেফটি, নো ডিউটি’ স্লোগান তুলে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখান। কর্মবিরতির ডাক দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ইলামবাজার থানা পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিলও করেন তাঁরা। স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও রোগীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দাবিতে এ দিন বিকেলে এসএফআই, ডিওয়াইএফ ও মহিলা সমিতির তরফে ইলামবাজার থানায় একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।

নির্যাতিতা নার্স বলেন, “ছ'বছরের চাকরি জীবনে কোনও দিন আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেনি। নাইট শিফটের ডিউটি করতেই হয়।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কর্মক্ষেত্রে রোগীর হাতে যদি এমন নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইলামবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিএমওএইচ-সহ ছ'জন চিকিৎসক, ১০ জন নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মিলিয়ে রয়েছেন ১০-১২ জন। জনা চারেক সাফাই কর্মী রয়েছেন। তাঁর মধ্যে প্রত্যেকদিন নাইট শিফটে থাকেন এক জন চিকিৎসক, এক জন নার্স, এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ও এক জন সাফাই কর্মী। শনিবার রাতে সেখানে রোগীর বিরুদ্ধে কর্তব্যরত নার্সকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠার পরে হইচই পড়ে যায় হাসপাতাল চত্বরে।

স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, বহিরাগতের অবাধ বিচরণ, রোগীর আত্মীয়দের হুমকির মধ্যেও দিনের পর দিন নাইট ডিউটি করতে হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মহিলা চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীদের। তার পরেও নিরাপত্তা মেলেনা।

আর জি কর কাণ্ডের পর প্রতিটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। এক স্বাস্থ্যকর্মীর কথায়, ‘‘সেগুলি যে নিছকই কথার কথা তা এই ঘটনার পর আবারও প্রমাণ হয়ে গেল।’’ স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, আর জি করের ঘটনার পর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে মাত্র দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘তাও তাঁরা সব দিন থাকতেন না। কোনও কোনও সময় এক জন সিভিক কিছু সময়ের জন্য থাকতেন।’’

নির্যাতিতা নার্স নিজে অভিযোগ করেছেন, যখন ওই ঘটনা ঘটে, তখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও পুলিশ ছিল না। পুলিশকে ফোন করে জানাতে হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, “যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তা দেওয়া হত তাহলে হয়তো এই ধরনের ঘটনা ঘটত না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ilambazar Health Workers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy