E-Paper

র‌্যাগিং বন্ধে কড়াকড়ি চান অধ্যাপক সুগত

স্বাধীনতা প্রাপ্তির প্রাক্কালে অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইনসভায় ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বাংলা ভাগের বিষয়ে ভোটাভুটি হয়েছিল। ওই দিনটিকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করছে বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৩ ১০:০০
পুরুলিয়া নিস্তারিণী কলেজে সুগত বসু। ছবি: সুজিত মাহাতো

পুরুলিয়া নিস্তারিণী কলেজে সুগত বসু। ছবি: সুজিত মাহাতো

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে র‌্যাগিংয়ে ছাত্র মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় চলছে। এই আবহে পুরুলিয়ায় এসে র‌্যাগিং বন্ধে যাতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ই তৎপর হয়, সেই বার্তা দিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক তথা প্রাক্তন সাংসদ সুগত বসু।

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার নিস্তারিণী কলেজে দেশবন্ধু স্মারক বক্তৃতা দিতে এসেছিলেন এই ঐতিহাসিক তথা রাজনীতিক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন র‌্যাগিং বরদাস্ত করা না হয়। কড়া হাতে তা দমন করতে হবে। পঠনপাঠনের সুষ্ঠু পরিবেশ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে।’’

উপাচার্যহীন অবস্থায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। পরে অন্তবর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। যাদবপুর কেন্দ্রের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ সুগতর পরামর্শ, ‘‘প্রথমত স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। রাজ্যপাল একে ওকে উপাচার্য করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এ ভাবে সমস্যার সমাধান হয় না।" এ দিন পুরুলিয়ার কলেজটির পরিবেশ দেখে ভাল লাগে তাঁর। বলেন, ‘‘এটাই তো হওয়া উচিত। এই পরিবেশ এখন যাদবপুরে নেই।’’

উল্লেখ্য, স্বাধীনতা প্রাপ্তির প্রাক্কালে অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইনসভায় ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বাংলা ভাগের বিষয়ে ভোটাভুটি হয়েছিল। ওই দিনটিকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করছে বিজেপি। চলতি বছরে তাকে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্য সরকার অবশ্য তার বিরোধিতা করছে। তৃণমূল মনে করছে, এতে বিভেদ আর বিভাজনের স্মৃতি উস্কে দেওয়ার চেষ্টা রয়েছে। তাই পয়লা বৈশাখ ‘বাংলা দিবস’ এবং ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটিকে রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে প্রস্তাব করেছে বিধানসভার গঠিত সংশ্লিষ্ট কমিটি। ওই কমিটির উপদেষ্টা সুগত বলেন, ‘‘যে সুপারিশ আমি করেছি, আশা করি রাজ্য তা গ্রহণ করবে।’’ এই ঐতিহাসিক মনে করিয়ে দেন, দেশভাগের ঘোষণা ইংরেজরা করেছিল ৩ জুন। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ঐক্যবদ্ধ বাংলা গড়ার স্বপ্ন সে দিন চূর্ণ হয়েছিল। তাঁর কথায়, "১৯৪৭ সালের ২০ জুন রাজভবনে যা হয়েছিল, নাচ-গানের আসর। সেটা খুব লজ্জাজনক ছিল। সে দিন যা ঘটেছিল, তা দেশভাগের ইতিহাসের মর্মান্তিক পাদটিকা মাত্র। সে জন্য এই দিনটি কখনও বাঙালিদের ক্যালেন্ডারে স্থান পায়নি। তাই অন্য একটি শুভ দিন বেছে নিতে হবে।"

২০১৮ সালে বিধানসভায় পাশ হয়েছিল রাজ্যের নতুন নাম ‘বাংলা’। সুগতর প্রস্তাব, ‘‘আগামী পয়লা বৈশাখ যেন ‘বাংলা’ নামটি আমরা গ্রহণ করি। এরপর থেকে প্রতি পয়লা বৈশাখ যেন বাংলা দিবস পালন করি। তাহলে সব সম্প্রদায় এক সঙ্গে বাংলা দিবস পালন করতে পারবে।’’

এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষা ইন্দ্রাণী দেব, কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি সুবলচন্দ্র দে প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে কলেজের অধ্যাপক প্রবীর সরকার বলেন, ‘‘সুগতবাবু ও লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সের অধ্যাপক সুমন্ত্র বসুর বক্তব্যে ছাত্রীরা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। নেতাজির উত্তরসূরিকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে আমরা সবাই গর্বিত।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Sugata Bose

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy