Advertisement
E-Paper

হেরেও আশা দেখাল নতুন মেয়েদের দল

লম্বা রান আপে বল করছিলেন পূর্ণিমা সিংহ। ফাস্ট স্পেলেই মেদিনীপুরের ওপেনিং ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিলেন। শুক্রবার মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে সিএবি পরিচালিত ওপেন উইমেন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পুরুলিয়া পর্বের খেলা শেষ হল।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৬
প্রত্যয়ী: ক্রীড়া সংস্থার মাঠে পুরুলিয়ার খেলোয়াড়েরা। নিজস্ব চিত্র

প্রত্যয়ী: ক্রীড়া সংস্থার মাঠে পুরুলিয়ার খেলোয়াড়েরা। নিজস্ব চিত্র

লম্বা রান আপে বল করছিলেন পূর্ণিমা সিংহ। ফাস্ট স্পেলেই মেদিনীপুরের ওপেনিং ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিলেন। শুক্রবার মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে সিএবি পরিচালিত ওপেন উইমেন ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পুরুলিয়া পর্বের খেলা শেষ হল। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে হুগলি। পুরুলিয়া কোনও ম্যাচেই জিততে পারেনি। কিন্তু প্রথম বার নিজেদের দল নিয়ে নেমে মাঠ না হোক, নজর কেড়ে নিয়েছেন জেলার মেয়েরা।

এক বছর আগেও মেয়েদের ক্রিকেটের দল ছিল না পুরুলিয়ায়। এ বারই দল গড়া হয়েছে। যোগ দেওয়া হয়েছিল সিএবি পরিচালিত মেয়েদের ওপেন টুর্নামেন্টে। পুরুলিয়ার দলটির কোচ গৌতম গড়াই বলেন, ‘‘পুরুলিয়া পর্বের খেলায় হুগলি, চন্দননগর, মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া— এই চারটি দল ছিল। তিনটি ম্যাচই জেতার সুবাদে গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে হুগলি। কিন্তু পুরুলিয়ার মেয়েরা প্রতিটি ম্যাচেই লড়াই করেছে।’’

গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সব জেলারই যে মেয়েদের দল আছে, তা নয়। যাদের নেই, তারা এক সঙ্গে মিলে ‘রেস্ট অফ ডিস্ট্রিক্ট ইলেভেন’ হিসেবে খেলে।’’ তিনি জানান, গত বারও দক্ষিণ দিনাজপুর ও পুরুলিয়া যৌথ ভাবে দল গড়ে এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল। এ বার ঠিক করা হয়েছিল, নিজেদের আলাদা দল

গড়া হবে।

অ্যাথলেটিক্সের ময়দানে, কন্যাশ্রী কাপ ফুটবলে জেলার মেয়েরা দাপিয়ে বেড়িয়েছে। প্রায় সমস্ত ব্লকেই মেয়েদের ফুটবল খেলার চল হয়েছে এখন। কিন্তু প্রত্যন্ত ব্লক তো দূরের কথা, জেলাসদর বা মহকুমা শহরগুলিতেই মেয়েদের ক্রিকেট মাঠে বিশেষ দেখা যায় না। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘মেয়েরা যে ক্রিকেট খেলবে, তেমন পরিবেশ এখনও গড়ে ওঠেনি।’’

তিনি জানাচ্ছেন, বছর দুয়েক আগে পুরুলিয়া ও দক্ষিণ দিনাজপুরের দলের একসঙ্গে প্রশিক্ষণ দিতে জেলায় শিবিরে এসেছিলেন সিএবির কোচ অর্পিতা ঘোষ। তখন যাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, তাঁরা কারও অভিজ্ঞতা ছিল সাঁতারের। কেউ শিখেছে অ্যাথলেটিক্স। কেউ দড় ফুটবলে। ক্রিকেট ভাল লাগে, তাই এসেছিলেন ময়দানে। ঘষামাজার পরে এখন ব্যাটে-বলে কেরামতি দেখাচ্ছেন সেই মেয়েরাই। গৌতমবাবু জানাচ্ছেন, এর জন্য গত এক বছর কঠোর অনুশীলন করতে হয়েছে তাঁদের।

প্রতিযোগিতায় পুরুলিয়ার হয়ে সব থেকে বেশি রান করেছেন ঈশিকা বাউড়ি। তিনি দলের অধিনায়কও। চারটে করে উইকেট নিয়েছেন শ্বেতা সিংহ ও পূর্ণিমা সিংহ। খেলোয়াড়েরা সবাই সাধারণ পরিবারের সদস্য। কারও বাবা টোটো চালান। কারও বাবা অ্যাম্বুল্যান্স চালক। কেউ পাড়াতেই ব্যবসা করেন। সপ্তাহে তিন দিন অনুশীলন। আদ্রা থেকেও খেলোয়াড় আসেন পুরুলিয়ায়। ঈশিকা বাউড়ি, শ্বেতা সিংহ, পূর্ণিমা সিংহ, পায়েল পাণ্ডে, প্রিয়া রায়, ঐশিকা অধিকারীরা এখন বলছেন, ‘‘বুঝতে পেরেছি, এ বারে আরও কঠোর অনুশীলন চাই।’’

মানভূম ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তা বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে কন্যাশ্রী কাপ ফুটবল জেলার সমস্ত ব্লকেই হচ্ছে। ফুটবলের পাশাপাশি এ বার ক্রিকেট মাঠেও যে মেয়েরা আসতে শুরু করল, আমরা যে দল গড়ে সিএবি-র টুর্নামেন্ট খেললাম— এগুলিই প্রাপ্তি।’’

Cricket Open Women Cricket Tournament CAB সিএবি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy