গ্রামে এল কফিনবন্দি রাজেশের দেহ। উপচে পড়ল ভিড়। নিজস্ব চিত্র
কেউ এসেছেন ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে, কারও বাড়ি অন্তত ৫০ কিলোমিটার দূরে। কেউ এসেছেন হেঁটে, কেউ বা সাইকেলে-মোটরবাইকে। শুক্রবার সাতসকাল থেকেই তাঁরা ভিড় করেছিলেন বেলগড়িয়া গ্রামে।
নিহত সেন জওয়ান রাজেশ ওরাংকে শেষবারের মতো দেখতে, শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে। তাঁদের অনেকেই এসেছিলেন বৃহস্পতিবারও।
কিন্তু, রাজেশের মরদেহ সে দিন না আসায় ফিরে যেতে হয়েছিল। এ দিন সকাল থেকে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে বিকেলে রাজেশের দেহ সমাধি দেওয়ার পরে তাঁরা ফিরেছেন। সকলের এক কথা, ‘‘জেলার ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিল। আর আমরা আসব না!’’
বস্তুত, এ দিন বেলগড়িয়া গ্রামে খুব কম করে হলেও ২০-৩০ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল। এত ভিড় ওই প্রান্তিক গ্রাম কখনও দেখেনি।
জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসেছিলেন। কেউ এসেছেন বোলপুর থেকে, কেউ মল্লারপুর থেকে, কেউ আবার দুবরাজপুর থেকে।
বোলপুরের পাপু মুখোপাধ্যায়, নিশান বাগদি এবং তাঁদের আট বন্ধু এ দিন ভোর থাকতেই চলে এসেছিলেন বেলগড়িয়ায়। পাপু ও নিশানের দাবি, তাঁরা বৃহস্পতিবারও আসতেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে আটকে পড়ে খুব হতাশ হয়েছিলেন। তাঁদের কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবার না আসতে পারায় খুব মন খারাপ হয়েছিল। কিন্তু, পরে যখন শুনলাম শুক্রবার সকালে রাজেশের মরদেহ আসছে, তখন বন্ধুরা পরিকল্পনা করি যে ভাবেই হোক সকালেই এসে উপস্থিত হব।’’ এ দিন ভোর পাঁচটায় তাঁরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। এই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। পাপুর কথায়, ‘‘কেবলমাত্র দেশের বীর সেনাকে একবার দেখার জন্য আমরা এত দূর থেকে এসেছি।’’
মল্লারপুর থেকে অভিষেক দাস, সুজয় দত্ত-সহ পাঁচ বন্ধু রাজেশকে দেখার জন্য সাতসকালেই মোটরবাইক নিয়ে বেলগড়িয়া গ্রামে এসেছিলেন। একই ভাবে বড় আলুন্দা গ্রামের বাসিন্দা উৎপল বাগদি, মহম্মদবাজারের সুভাষ বাউরি-সহ হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছিলেন। মহম্মদবাজারের কাঁইজুলি গ্রামের বাসিন্দা সন্ন্যাসী বাউরি বলেন, ‘‘রাজেশের মতো সেনাবাহিনীর জওয়ানেরা ওঁরা বর্ডারে আছেন বলেই আমরা বাড়িতে নিরাপদে আছি। রাজেশ দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। তাই ওঁকে শেষবার দেখা এবং শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এসেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy