একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েছিলাম। রাত দশটার দিকে। নিঝুম গ্রামে অনেকেই তখন ঘুমের দেশে। ঘরে লোক বলতে আমার স্বামী, এক প্রতিবন্ধী ছেলে এবং এক মেয়ে মিলিয়ে মোট চার জন। সকলেই ঘুমিয়ে পড়েছি। গভীর ঘুমের মধ্যেই হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ পেলাম। কীসের শব্দ বুঝিনি। আওয়াজের তীব্রতায় জ্ঞান হারাই। কতক্ষণ ওই ভাবে ছিলাম বুঝিনি। হুঁশ ফিরল চিৎকার, চেঁচামেচিতে। উঠতে গিয়ে দেখি গায়ের উপরে ইট-সিমেন্টের গুঁড়ো!
কোথা থেকে এল ও সব গুড়ো? পলকে মনে পড়ে গেল কিছু সময়ের আগের ভয়ানক শব্দের কথা। তখনই নজরে এল টিনের চাল ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। মেঝেতে ফাটল ধরেছে। তবে কি ভূমিকম্প?
মনে একরাশ আশঙ্কা নিয়ে বেরিয়ে এলাম বাইরে। ওমা, বাড়ির সামনের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটা গেল কোথায়? চেনা ছবিটা পুরো পাল্টে গিয়েছে। পোড়া পোড়া গন্ধ বেরোচ্ছে কোথা থেকে? একটু একটু করে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারলাম বিস্ফোরণ হয়েছে। কিন্তু, ঘোর কাটছিল না।
কেন, কোথা থেকে বিস্ফোরণ? কতটা জোরে বিস্ফোরণ হলে আস্ত বাড়িটা ভেঙে পড়তে পারে! কারা এমন ঘটনা ঘটাল কে জানে। কিন্তু, ওতে আমাদের বাড়িটাও তো ক্ষতিগ্রস্ত হল। আমরা গরিব মানুষ। ঘর সারতে হিমসিম খেতে হবে। কাকে বলব সে কথা? কে দেবে ক্ষতিপূরণের টাকা?
(অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঠিক পিছনের বাড়ির বাসিন্দা)