E-Paper

অনার্সে নম্বর বাড়ানোর অভিযোগ মেডিক্যালে

জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, তৃতীয় বর্ষ থেকে ফাইনাল ইয়ারে যে পরীক্ষা, তার মধ্যে অপথ্যালমোলজি এবং ফরেন্সিক মেডিসিন, এই দু’টি বিষয়ে অনার্সের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪১
মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ 'থ্রেট কালচারের' বিরুদ্ধে। ছবি সব্যসাচী ইসলাম

মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ 'থ্রেট কালচারের' বিরুদ্ধে। ছবি সব্যসাচী ইসলাম নিজস্ব চিত্র

হুমকি-সংস্কৃতির অভিযোগ ছিলই। এ বার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মতো রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজেও নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হলেন জুনিয়র ডাক্তারদের বড় অংশ। আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ বুধবার দুপুরে কলজে কাউন্সিলের বৈঠকে এ ব্যাপারে রামপুরহাট মেডিক্যালের অধ্যক্ষ করবী বড়ালের কাছে
মৌখিক অভিযোগ করেছেন। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘ছাত্রদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠাব।’’

জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, তৃতীয় বর্ষ থেকে ফাইনাল ইয়ারে যে পরীক্ষা, তার মধ্যে অপথ্যালমোলজি এবং ফরেন্সিক মেডিসিন, এই দু’টি বিষয়ে অনার্সের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিন দুপুরে অধ্যক্ষের সঙ্গে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে অনার্সে নম্বর বাড়ানো নিয়ে সরব হন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা জানান, অনার্সের নম্বর ডাক্তারি পড়ুয়াদের কাছে বিশেষ প্রাপ্তি হিসাবে দেখা হয়। যে-সব চিকিৎসক এমবিবিএস পাশ করার পরে চাকরির জন্য আবেদন জানান, তাঁদের ক্ষেত্রে অনার্সের প্রাপ্ত নম্বরে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। আবার চিকিৎসকদের বিষয়-ভিত্তিক নম্বরের উপরে গোল্ড মেডেলেও দেওয়া হয়। সেই কারণে অনার্সের নম্বর এক জন চিকিৎসকের কাছে যথেষ্ট সম্মানের বিষয়।

আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের অভিযোগ, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মতো অপেক্ষাকৃত কম মেধার পড়ুয়াদের অনার্সে বেশি নম্বর পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার মেধাবীদের কয়েক জনের নম্বর কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনরত ডাক্তারদের দাবি, ২৯ জন অনার্স প্রাপকের মধ্যে বেশ কয়েক জন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত। এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘কলেজ কাউন্সিল বৈঠকে এ দিন মৌখিক ভাবে নম্বর বাড়ানো-কমানোর অভিযোগ করা হয়েছে।’’

পাশাপাশি, এ দিনের বৈঠকে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গঠন করার ব্যাপারে কলেজের সমস্ত বিভাগের পড়ুয়াদের মতামত নেওয়া হয়। অধ্যক্ষ জানান, অধিকাংশ
পড়ুয়াই অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ে তোলার পক্ষে মত দিয়েছেন। এর আগের কলেজ কাউন্সিলের
বৈঠকেও অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন থাকার পক্ষে সওয়াল
করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা।

আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা পরে জানান, ছাত্র কাউন্সিলে অভীক দে, অনিকেত গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুগামীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই অভীক ও অনিকেতের অনুগামী হিসাবে পরিচিত তিন জন ছাত্রের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার কলেজে হুমকি সংস্কৃতি চালানোর জন্য অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা এ দিন দাবি করেছেন, কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকেও ওই তিন জন পড়ুয়াকে ‘বয়কট’ করা হয়েছে। মাঝপথেই ওই তিন জন বেরিয়ে যান। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যাচ্ছে, মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র অনিকেত। অভীকের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। তিনি রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে প্রায়ই আসতেন। আর জি কর-কাণ্ডের পরে আর আসেন না বলে জানাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ফোনে অনিকেতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা বৈঠক শেষে ক্যাম্পাসে আর জি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে স্লোগানও দেন। অভীক দে, বিরুপাক্ষ বিশ্বাসদের বিরুদ্ধেও স্লোগান ওঠে। পাশাপাশি কলেজে হুমকি সংস্কৃতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করবী বড়াল বলেন, ‘‘ছাত্রদের অভিযোগ পেয়েছি। হুমকির বিষয়ে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rampurhat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy