Advertisement
০৪ মে ২০২৪

নজরে দিদি

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনের লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কাছে আশ্রম এলাকায় দূষণ, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালুর আর্জি জানান বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত।

ফের ডাকবেন
শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৬ ০১:২৭
Share: Save:

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনের লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কাছে আশ্রম এলাকায় দূষণ, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালুর আর্জি জানান বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজীব গাঁধী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন বিশ্বভারতীর কোর্ট মেম্বার ছিলাম। কখনও যোগেন চৌধুরী আবার কখনও অমর্ত্য সেনের মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। কিন্তু বিশ্বভারতীকে উপলব্ধি করার ইচ্ছে থাকলেও, হয়ে ওঠেনি। স্বপনবাবুর উত্তরীয় পরানোকে ‘জীবনের পরম পাওনা’ বলে তিনি জানান, ‘‘আমাকে কেউ ভালবেসে এসো বললে আসি। আপনাদের কোনও সময়ে কোনও কিছুর যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আছি। শুধু বলে দেখবেন।’’ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষে মুখ্যমন্ত্রীকে ফের আসার আমন্ত্রণ জানান স্বপনবাবু। বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে তাঁকে গীতাঞ্জলি, শিল্পসদনের ছাত্রছাত্রীদের তৈরি শাল, উত্তরীয়, রবীন্দ্রনাথের বেশ কিছু ছবির কপি, সঙ্গীতভবনের রবীন্দ্র সঙ্গীতের সিডি তাঁর হাতে তুলে দেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। ওই অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী পায়ে হেঁটে পূর্বপল্লির রাস্তায় বেরিয়ে কেন্দ্রীয় দফতরের সামনের রাস্তা ধরে ছাতিমতলায় যান। সেখানে বাতি জ্বালিয়ে রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা জানান।

এ বারও

জেলার সব নেতাই হাজির। প্রশাসনিক বৈঠকে দলের সকল কাউন্সিলরও— কে নেই! কেবল ডাক পাননি বিরোধী দুই বিধায়ক। হাঁসনের কংগ্রেস বিধায়ক মিলটন রসিদ এবং নানুরের সিপিএম বিধায়ক শ্যামলী প্রধান। কী বলছেন মিলটন? ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মুখে বলছেন রাজ্যবাসীর উন্নয়ন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এটা দলীয় উন্নয়ন। আমরা তো এলাকার মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। এই এলাকার মানুষের কিছু চাওয়া পাওয়া আছে। আমরা তা জানাতে পারলাম কই!’’ একই কথা জানিয়েছেন শ্যামলী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমন্ত্রণ পাইনি, পেলে যেতাম।’’ কেন তাঁরা ডাক পাননি, মুখ খোলেননি জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

প্রশ্ন-উত্তর

কতগুলি পুকুর সংস্কার করছেন? — প্রশাসনিক বৈঠকে রামপুরহাটের বিডিও নীতিশ বালাকে প্রথমেই প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। একই প্রশ্ন রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পম্পা মুখোপাধ্যায়কে। প্রশ্ন শুনে থতমত পম্পাদেবী। বলেন, ‘‘বিডিও যা বললেন তাই!’’ মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেন, ‘‘কেন তুমি জান না?’’ এর পর একগুচ্ছ পুকুরের নাম করে সভাপতিকে বলেন, এটা সংস্কার হয়েছে। ওটা সংস্কার হয়েছে। পম্পাদেবী সম্মতি দিতেই মুখ্যমন্ত্রীর ফের প্রশ্ন, ‘‘ওটা তো বড় পুকুর। ওটার সংস্কারের কী প্রয়োজন?’’ প্রশ্ন-উত্তরে অবাক সকলে! হবে নাই বা কেন, সভাপতি যে আদতে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কিত ভাইঝি।

এত দিনে

কোনও বোর্ডে লেখা ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ।’ কোথাও শামুক ও কচ্ছপের ছবি ব্যবহার করে লেখা ‘হেলমেট পড়ুন, নিরাপদ থাকুন।’ জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই, নিরাপদ ড্রাইভিং নিয়ে জেলাপুলিশ এমন নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। হঠাৎ কেন এই উদ্যোগ? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টির উপর চূড়ান্ত গুরুত্ব দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার জেলার ওসি-আইসিদের উদ্দেশে তাঁর নির্দেশ, কেউ বেপরোয়া গাড়ি চালায় এবং তার জন্য যদি দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে যেন এটাকে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়!

অপেক্ষাই সার

পুরুলিয়া থেকে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে রাতেই আমার কুটিরে জেলা পরিষদের অতিথি নিবাস ‘রাঙাবিতানে’ হাজির মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তাই ‘দিদি’কে দেখার আশায় শ্রীনিকেতন মোড়ে তখন অপেক্ষায় কয়েকশো মানুষ। চায়ের দোকানি থেকে কলেজ পড়ুয়া। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, দিদি হয়তো প্রাতর্ভ্রমণ করতে আসবেন। কিন্তু প্রতীক্ষাই সার। মুখ্যমন্ত্রী প্রাতর্ভ্রমণ সারলেন ‘রাঙাবিতানে’র মধ্যেই। তার মাঝে ঘুরে ঘুরে দেখলেন সাজানো বাগান।

মিষ্টি নিয়ে

ঘড়িতে তখন দুপুর ২টো। গীতাঞ্জলির গেটে বড় বড় দুই প্যাকেটে মিষ্টি নিয়ে হাজির তৃণমূল নেতা সুদীপ ঘোষ! কী ব্যাপার? নিরাপত্তা রক্ষীদের হাঁক-ডাক। খবর ছড়াতে ছড়াতে গেটে হাজির হলেন দলের জেলা সম্পাদক অভিজিৎ সিংহ (রানা)। নিরাপত্তা রক্ষীদের জানান হয়, ‘‘দিদির নির্দেশে মিষ্টি।’’ জানা গেল, এলাকার একটি দোকান থেকে ৪৫টি করে বিশেষ সন্দেশের দু’প্যাকেট মিষ্টি। মিষ্টি কেন? দলের অন্দরের খবর, বিশ্বভারতী নিয়ে যাওয়ার জন্য মিষ্টি চেয়েছেন দিদি!

ব্যর্থ মনোরথে

‘দিদি’ এসেছেন আমার কুটিরে। — তাই এ দিন কিছুতেই যেন মন বসে না সুরুল নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। শুধু কি পড়ুয়া? শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ওঁত পেতে বসেছেন, দিদির যাওয়ার পথে যদি দেখা মেলে? সুরুল, শ্রীনিকেতন, মোলডাঙা, বোলপুর-সহ কয়েক হাজার বাসিন্দা জড় হয়েছিল দিদিকে দেখার জন্য। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরেও দেখা মিলল না! কনভয়ের আওয়াজ শুনে এবং গাড়ির মিছিল দেখতে দেখতেই অদৃশ্য হতে হল তাঁদের।

কানে কানে

পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠক সেরে বুধবার রাতে বোলপুরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। সকলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের কিছু পর, অনুব্রতকে ডেকে নেন। কি কথা হল? মুখে কুলুপ ‘কেষ্ট’র। দল বলছে, দিদি একান্তে দলের হালচালের খবর নিয়েছেন। নানুর এবং হাঁসনে হারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। শোনা যাচ্ছে তোলাবাজি, সিন্ডিকেট, বালিরঘাট নিয়েও কথা হয়েছে। প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে ঘণ্টা দেড়েক। ঘণ্টা দেড়েক ধরে দু’দফায় মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে আলোচনা করেছেন অনুব্রত!

ডেঙ্গি সতর্কতা

ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে রাজ্যে। সেই জন্য বীরভূমকেও সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে এই নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দিলেন তিনি। বিশেষ করে জেলার ছটি পুরপ্রধানের উদ্দেশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, নিজের নিজের এলাকার স্কুল ও হাসপাতাল চত্বর যেন পরিচ্ছন্ন রাখা হয়।

মাঝপথে

প্রশাসনিক বৈঠক চলছে। হঠাৎ হন্তদন্ত ফিরহাদ হাকিম। বেরিয়ে এলেন সভা ছেড়ে। ভুরু কুঁচকে সপ্রশ্ন চাহনি। বৈঠকে কী হল? বাইরে শুরু হল নানা জল্পনা। ববি জানালেন, ‘‘রাত আটটায় বিমানের সময়। আজমীর শরিফ যেতে হবে। তাই দিদিকে বলে বেরিয়ে এসেছি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Santiniketan Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE