বিষ্ণুপুর বাইপাসের পাশে এ ভাবেই পড়ে রয়েছে পাইপ। —নিজস্ব চিত্র
রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছে প্রচুর জিআই পাইপ। কিন্তু কী উদ্দেশ্যে কারা এনেছে, তাই নিয়ে ধন্দে পুলিশ।
বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ মাসখানেক আগে জিআই পাইপ নিয়ে যাওয়া একটি ট্রাক আটক করে। গাড়িচালক পাইপ নিয়ে যাওয়ার প্রামাণ্য কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পুলিশ সে বার ওই গাড়ি থেকে উদ্ধার করা ৪১টি পাইপ আটক করে। এরপর বুধবার বেশি রাতে আরও একটি ট্রাক আটক করে ৬৩টি জলের পাইপ আটক করে পুলিশ। এ ক্ষেত্রেও ওই ট্রাক থেকে কোনও কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। পাইপ চুরি করে পাচারের চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ ওই ট্রাক থেকে আটজনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে ট্রাক চালকের বাড়ি কলকাতার মহেশতলায়। বাকি সাতজন মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা।
দু’দফায় এত পাইপ উদ্ধার হলেও ওই পাইপের দাবি জানাতে কেউ আসেনি। পাইপ চুরি যাওয়ার অভিযোগও দায়ের হয়নি। ফলে ওই পাইপগুলির মালিকানা নিয়ে ধন্দে পড়েছে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। কারণ এত পাইপ থানায় রাখা নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়েছে।
এ দিকে, বিষ্ণুপুরের রাস্তায় জলকলের পাইপ লাইনের কাজ দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছে। বাইপাসে নির্মীয়মাণ বাসস্ট্যান্ডের গায়ে তাই বহু পাইপ জড়ো করে রাখা আছে। পর পর দু’বার ওই এলাকা থেকে পাইপ বোঝাই ট্রাক ধরা পড়ায় অনেকের সন্দেহ ওই পাইপগুলি মাঠ থেকেই নেওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি, ধৃতদের কাছ থেকে কোথা থেকে পাইপ আনা হয়েছে, তা জানা যাচ্ছে না। আবার অরক্ষিত অবস্থায় কারা বাইপাস এলাকায় অত পাইপ রেখেছে সেই ধোঁয়াশাও কাটছে না।
তবে পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বুধবার উদ্ধার করা পাইপগুলি বাইপাস এলাকা থেকেই নেওয়া হয়েছিল বলে তাঁরা প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে। কিন্তু ওই এলাকায় কাদের পাইপ রয়েছে, তা নিয়ে ধন্দ কাটছে না। রহস্য আরও দানা বেঁধেছে যাদের পাইপ চুরি গিয়েছে, তারা অভিযোগ না করায়।
শুক্রবার বিষ্ণুপুরে সরকারি বিভিন্ন দফতরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, কেউই জানে না কারা বাইপাস এলাকায় পাইপ রেখেছে। পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পুলিশের উদ্ধার করা ওই পাইপ তাঁদের নয়। বাইপাস এলাকাতেও তারা পাইপ রাখেনি। একই দাবি করেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরও। তবে মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেটের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ভাস্কর বসু বলেছেন, ‘‘বিষ্ণুপুর পুরসভায় পাইপ লাইনের কাজ হচ্ছে বলে জানি। তারাই জানে কোথায় পাইপ কোথায় রেখেছে। পুলিশের উদ্ধার করা পাইপগুলোও কোথাকার, তা জানি না।’’ বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও দাবি করেছেন, পাইপ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
তবে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে! যে কারণে পাইপ চুরি গেলেও কোনও দফতর অভিযোগ জানাতে এগিয়ে আসছে না? এ প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। বিষ্ণুপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিবেক বর্মা বলেন, ‘‘পাইপগুলি চুরি যাওয়ার পরেও সরকারি কোনও দফতর আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, উদ্ধার করা পাইপগুলি বাইপাস এলাকা থেকেই চুরি করা হয়েছিল। ওই এলাকায় পুরসভাই পাইপ রেখেছে বলে একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে। তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy