চলছে হাম এবং রুবেলার টিকাকরণ। — ফাইল চিত্র।
পূরণ না হলেও লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে শেষ হল পুরুলিয়ায় হাম-রুবেলার টিকাকরণ কর্মসূচি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট টিকাপ্রাপকের ৯৩.২৯ শতাংশকে টিকা দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সূচি মেনে শনিবারই ছিল টিকাকরণ কর্মসূচির শেষ দিন। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আপাতত বন্ধ থাকবে টিকাকরণ।
গত ৯ জানুয়ারি গোটা রাজ্যের সঙ্গে পুরুলিয়াতেও শুরু হয় টিকাকরণ কর্মসূচি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ৮,৪২,৯৫৫ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৭,৮৬,৪০৮ জনকে তা দেওয়া গিয়েছে। এর আগে, জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত টিকাদানের নিরিখে কিছুটা পিছিয়ে ছিল পুরুলিয়া। টিকাদানের হার ছিল ৭৬ শতাংশের কিছু বেশি। জেলার স্বাস্থ্য-কর্তারা জানিয়েছিলেন, মকর সংক্রান্তি-সহ নানা ছুটির দিন পড়ে যাওয়ায় টিকাদান কিছুটা শ্লথ হয়।
স্বাস্থ্য দফতরের পাশাপাশি পরে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে মাঠে নামে ইউনিসেফও। সংস্থার তরফে জেলার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। ইউনিসেফের এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, জেলার ১১০ জন ধর্মগুরুর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তাঁরা।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কুণালকান্তি দে বলেন, “লক্ষ্যমাত্রার ৯৩.২৯ শতাংশে আমরা পৌঁছতে পেরেছি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পরবর্তী যা নির্দেশ আসবে, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ হবে।” দফতরের এক পদস্থ কর্তার দাবি, লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশে পৌঁছনো গেলেই তা ভাল বলে ধরা হয়। তবে এখনও জেলার হাতে টিকা মজুত রয়েছে। যারা এখনও টিকা নেয়নি, নিচুতলার স্বাস্থ্যকর্মীদের তাদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছল বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলাও। যদিও জেলার তিন পুর-শহরে কাগজে-কলমে লক্ষ্যমাত্রার অনেকটা পূরণ হয়নি বলে খবর সূত্রের। সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য-জেলার কর্তারা জানিয়েছেন, কারা টিকা নিতে বাদ পড়েছে, তা সমীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৯ শতাংশ পূরণ হয়েছে বলে দাবি জেলা স্বাস্থ্য় দফতরের। ১৬টি ব্লকের মধ্যে ইঁদপুর, ছাতনা, সারেঙ্গা, গঙ্গাজলঘাটি ও বাঁকুড়া ১ ব্লকে ১০০ শতাংশকেই টিকা দেওয়া হয়েছে। বাকি ব্লকগুলিতে গড়ে ৯৫ শতাংশের বেশি টিকাকরণ হলেও ওন্দা ব্লকে ৮৯ শতাংশ ও বাঁকুড়া পুরশহরে ৮৫ শতাংশ টিকাকরণ হয়েছে। বাঁকুড়ার ডেপুটি সিএমওএইচ (৩) সজল বিশ্বাস বলেন, “টিকা দেওয়ার কাজ ব্লকগুলিতে ভাল ভাবেই হয়েছে। বাঁকুড়া শহরে আরও কেউ বাকি রয়ে গিয়েছে কি না, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
এ দিকে, বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ওই স্বাস্থ্য-জেলা সূত্রে খবর, অন্য ব্লকগুলিতে গড়ে ৯৭ শতাংশের বেশি টিকাকরণ হলেও বিষ্ণুপুর পুর-শহরে তা ৭৫ শতাংশ ও সোনামুখী পুরসভায় তা ৭৮ শতাংশেই এসে শেষ হয়েছে।
বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিজয়প্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী পুরশহরে শিশুর তথ্য বেশি দেখানো হয়েছে। তাই ওই দুই পুরশহরে টিকা দেওয়ার সংখ্যাও কম হয়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি। দুই শহরে সকলে টিকা নিয়েছে কি না, জানতে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।” সংশ্লিষ্ট পুরসভা কর্তৃপক্ষও শিশুর তথ্য বাড়তি দেখানো হয়েছে বলেদাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy