রাঁচিতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন এক প্রৌঢ়া ঝালদা পুলিশের তৎপরতায় খুঁজে পেলেন তাঁর পরিজনদের।
গত ২ জুলাই ছেলের সঙ্গে রাঁচিতে চিকিৎসা করতে গিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়া। সেখান থেকেই তিনি হারিয়ে যান। তারপর কী ভাবে তিনি এসে পড়েছিলেন ঝালদায়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঝালদা সত্যভামা বিদ্যাপীঠের সামনে তাঁকে ক্ষুধার্ত ভাবে ঘুরতে দেখা যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ডেকে মিড-ডে মিল খাওয়ান। খবর দেন পুলিশে। ঝালদা থানার পুলিশ কর্মীরা তাঁকে থানায় নিয়ে আসেন। তারপর কী ভাবে ওই প্রৌঢ়াকে তাঁর বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা শুরু হয়।
এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ওই মহিলা নিজের পরিচয় প্রথম দিকে কিছুই বলতে পারছিলেন না। অনেক চেষ্টার পরে জানা যায়, তাঁর নাম সীমা দেবী। যদি কিছু লেখেন, এই ভেবে একটা কাগজ ও পেন এগিয়ে দেওয়া হয়। তিনি শুধু লেখেন— সাসারাম। চা খাইয়ে ফের আরেক দফা জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, ‘তিলাই’।
পুলিশ কর্মীরা সাসারাম ও তিলাই— এই শব্দ দু’টো ধরে ইন্টারনেটে খোঁজ করেন। জানান যায়, বিহারের সাসারাম জেলায় সাংহালি থানায় তিলাই নামের একটি গ্রাম রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সাংহালি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিলাই গ্রামের কোনও মহিলা নিরুদ্দেশ হয়ে ছেন বলে সেখানকার পুলিশের কাছে কোনও খবর ছিল না।
ঝালদা থানার পুলিশ কর্মীরা অবশ্য হাল ছাড়েননি। প্রৌঢ়াকেও রাতে অন্যত্র না পাঠিয়ে থানাতেই খাবার দিয়ে রেখে দেন।
পরের দিন শুরু হয় ফের জিজ্ঞাসাবাদ। তখন প্রৌঢ়ার মুখ থেকে বেরোয়— ‘বোকারো’। ঝালদা থানার পুলিশ বোকারো জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিছুক্ষণ পরে বোকারোর পুলিশ জানায়, বোকারোর মারাফারি থানায় এক মহিলা নিখোঁজের ডায়েরি হয়েছে।
মারাফারি থানায় প্রৌঢ়ার ছবি পাঠানো হয়। সঙ্গে সঙ্গেই রহস্যের সমাধান হয়ে যায়।
জানা যায়, সীমা দেবীর ছেলে দেবীদয়াল প্রসাদ থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেছিলেন। পরিবারটি আদতে বিহারের সাসারামের তিলাই গ্রামের বাসিন্দা হলেও দেবীদয়াল কর্মসূত্রে বোকারোর মারাফারিতে থাকেন। মায়ের খবর পেয়েই তিনি শুক্রবার রাতে ঝালদায় পৌঁছন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, মায়ের চিকিৎসা করাতে তাঁরা রাঁচি গিয়েছিলেন। সীমা দেবীকে তিনি এক জায়গায় অপেক্ষা করতে বলে নিজে চা খেতে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন তাঁর মা নেই। তবে সেখান থেকে সীমা দেবী কী ভাবে ঝালদায় এসে পড়েন, তা অবশ্য পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়।
সীমা দেবীকে ফিরে পেয়ে পুলিশ কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তাঁর পরিজনেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy