Advertisement
E-Paper

বাড়িতে দুষ্কৃতীদের হামলা, নিহত বৃদ্ধ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমা গ্রামের ঘোষপাড়ায় একতলা পাকা বাড়িতে থাকতেন বৃদ্ধ নির্মলবাবু এবং তাঁর বিধবা মেয়ে ঝর্ণা বণিক। প্রৌঢ়া ঝর্ণাদেবী স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৫৮
মৃত: তখনও বেঁচে। সিউড়ি হাসপাতালে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

মৃত: তখনও বেঁচে। সিউড়ি হাসপাতালে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

রাতের অন্ধকারে বাড়িতে ঢুকে দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হলেন বাবা ও মেয়ে। পরে সিউড়ি জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয় বাবার। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ সিউড়ি ২ ব্লকের দমদমা গ্রামের এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম নির্মল সাধু (৭৫)। বাড়ি ওই গ্রামেই। তবে চুরির উদ্দেশে হামলা, না কি ব্যক্তিগত আক্রশ— বুধবারও পুলিশের কাছে সেটা স্পষ্ট হয়নি। এলাকাবাসীর অবশ্য দাবি, চুরিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা বলে মনে হলেও আক্রমণের পিছনে অন্য রহস্য কিংবা অভিসন্ধি রয়েছে। দাবি উঠেছে পুলিশ কুকুর আনিয়ে তদন্তেরও। ঘটনাস্থলে পৌঁছেয় পুলিশ বাহিনী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমা গ্রামের ঘোষপাড়ায় একতলা পাকা বাড়িতে থাকতেন বৃদ্ধ নির্মলবাবু এবং তাঁর বিধবা মেয়ে ঝর্ণা বণিক। প্রৌঢ়া ঝর্ণাদেবী স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী। মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে ঢুকে তাঁদের উপরে হামলা চালায় জনা তিনেক দুষ্কৃতী। ওই বাড়িতে একটু তফাতে আলাদা থাকেন নির্মলবাবুর ছেলে পরশমানিক সাধু। অভিযোগ, রাত বারোটা থেকে সাড়ে বারোটা নাগাদ হঠাৎ ঘরে ঢুকে পড়ে অন্তত তিন জন দুষ্কৃতী। বাবা-মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে
আক্রমণ করে। স্থানীয়দের অনেকের অনুমান, উপরের ছাদ থেকে ঘরে ঢোকার দরজা অসাবধানতায় খুলে রেখেছিলেন ওঁরা।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা এসে প্রথমেই ইলেকট্রিকের মেন সুইচ নামিয়ে দেয়। তারপরই ঘায়েল করে পালিয়ে যায়। বেশ কিছু সময় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার পরে ভাই পরশমানিক সাধুর কাছে গিয়ে সাহায্য চান ঝর্ণাদেবী। এরপরই প্রতিবেশীদের সাহায্যে আহত নির্মলবাবু ও তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের গলায় ও আঙুলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানের চিহ্ন ছিল। ঝর্ণাদেবীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বৃদ্ধ নির্মলবাবুর আঘাত মারাত্মক ছিল। বুধবার দুপুরে মারা যান তিনি।

বুধবার সকালে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আহত ঝর্ণাদেবী বলেন, ‘‘রাতে আচমকাই মুখ ঢাকা জনা তিনেক দুষ্কৃতী ঘরে ঢুকে পড়েছিল। কোনও কারণে শুরুতেই বুঝতে পারিনি। কানের দুলে টান পড়তেই ঘুম ভাঙে আমার। আর কী আছে, জানতে চাইলে বলি আমাদের কিছু নেই। তারপরই ছুরি দিয়ে আঘাত করে চলে যায় বাবার ঘরের দিকে।’’ যদিও ঠিক কী কী চুরি গিয়েছে, এবং কেন
এমন আক্রমণ সেটা স্পষ্ট করতে পারেননি ঝর্ণাদেবী।

তবে, চুরির তত্ত্বে খুব একটা বিশ্বাস করে রাজি নন গ্রামবাসী। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পড়শিরা বলছেন, ‘‘এমনিতে নির্বিরোধী ছিলেন ওঁরা। সামান্য জমি আর অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী হিসাবে কাজ করে ওঁরা কত টাকা জমিয়েছেন যে ওদের বাড়িতে চুরি হবে? ঝর্ণাদেবীর বোন যমুনা সাধু, আত্মীয় শ্রীকুমার সাধু এবং ভাইঝি মাম্পি সাধুরা বলছেন, ‘‘কেন এমন আক্রমণ সত্যিই বুঝতে পারছি না।’’ ঝর্ণাদেবীর ভাই পরশমানিক সাধু বলছেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করুক।’’

জেলা পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক কিংবা গ্রেফতার করা হয়নি। বুধবার রাত পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

Old Man Dead
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy