E-Paper

পুলিশের পক্ষে-বিপক্ষে, জনমত দু’ভাগ

পুরুলিয়ার এক পুলিশকর্মী সমাজ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘পুলিশের মেয়ের চিন্তা ছাড়ো, সে লড়াই করেই হচ্ছে বড়। হচ্ছে বড় ছেলেও তোমার, তার দায়ও কি পুলিশের একার?’

সমীরণ পাণ্ডে

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৪২
পুরুলিয়ায়

পুরুলিয়ায়

আর জি করের ঘটনার পরে পুলিশের প্রতি ক্ষোভে আন্দোলনকারীরা স্লোগান তুলেছিলেন, ‘পুলিশ তুমি চিন্তা করো, তোমার মেয়েও হচ্ছে বড়’। কলকাতা ছাড়িয়ে সেই স্লোগান ছড়িয়ে পড়েছিল জেলাতেও। মেয়েদের অরাজনৈতিক ‘রাত দখল’ কর্মসূচি থেকে বিজেপির থানা ঘেরাও কর্মসূচিতেও শোনা যাচ্ছিল সেই স্লোগান। নবান্ন অভিযানে পুলিশকর্মী রক্তাক্ত হওয়ার পরে পুলিশের তরফেও সমাজ মাধ্যমে পাল্টা প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।

আর জি কর কাণ্ডের পরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আমজনতা কার্যত দ্বিধাবিভক্ত। একপক্ষ সমাজ মাধ্যমে, পথেঘাটে, তর্কে-বিতর্কে পুলিশের পক্ষ নিচ্ছেন তো অন্য পক্ষ পুলিশকে তুলোধনা করছেন। ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানের দিন চোখে আঘাত পাওয়া কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তীর ছবি অনেকেই পুরুলিয়া জেলা পুলিশের ওসি-আইসিরা ডিসপ্লে পিকচারে ব্যবহার করছেন। অনেকে সমাজ মাধ্যমে পাল্টা পোস্টে লিখেছেন, ‘পুলিশের মেয়ের চিন্তা ছাড়ো, সে লড়াই করেই হচ্ছে বড়।’ পুলিশকর্মী, সিভিক ভলান্টিয়াররা ঝড়ের গতিতে সেই পোস্ট শেয়ার করছেন। অনেকে আবার প্রশ্ন তুলেছেন, ‘শুধু পুলিশের মেয়েদেরই লড়াই
শেখানো হচ্ছে কেন? ডাক্তার ,ইঞ্জিনিয়ার ,শিক্ষকের মেয়েরা কী দোষ করল?’

পুরুলিয়ার এক পুলিশকর্মী সমাজ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘পুলিশের মেয়ের চিন্তা ছাড়ো, সে লড়াই করেই হচ্ছে বড়। হচ্ছে বড় ছেলেও তোমার, তার দায়ও কি পুলিশের একার?’ তবে নেট-নাগরিকরাও জবাব দিতে দেরি করেননি। একজন লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে যেখানে পুলিশের মেয়েকেই লড়াই করে বাঁচতে হচ্ছে সেখানে সাধারণ মেয়েরা লড়াই না করে বাঁচবে সেটা ভাবা বিলাসিতা মাত্র।’ একজনের আবার পরামর্শ, ‘একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি না করে আসুন সবাই মিলে পরিবেশকে বাঁচার উপযোগী করে গড়ে তুলি।’

পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা সুইটি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘পুলিশ যদি নিজের কাজে এতটাই তৎপর হত তাহলে আনিস খানের ঘটনা ঘটত না। সুদীপ্ত গুপ্ত বা স্বপ্নদীপের ঘটনা ঘটত না। আর জি করে ধর্ষক খুনিরা এতদিনে শাস্তি পেত। তা না করে পুলিশ নিজেদের চাকরি বাঁচাতে ঠিক ভুল বিচার না করে কথা বলছে।’’ এ বিতর্ক যেন থামার নয়।

পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক সৌম্যজিৎ পাত্র বলেন, ‘‘আর জি কর পরবর্তী ঘটনাবলির গভীর সমাজতাত্ত্বিক তাৎপর্য রয়েছে। কে, কোন পক্ষের হয়ে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন তার চেয়েও বড় কথা বহু মানুষ যারা অন্য ঘটনায় হয়তো কোনও প্রতিক্রিয়া দিতেন না তাঁরাও মতামত দিচ্ছেন। প্রান্তিক মানুষও বিচলিত হয়েছেন। এটা হল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রকাশ। গণতন্ত্রের পরিসর বাড়ছে। শাসন ব্যবস্থাকে নির্দিষ্ট অভিমুখে চালনা করতে এটা অত্যন্ত জরুরি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy