Advertisement
E-Paper

হনুমান মন্দির গড়তে টাকা মহম্মদ পাপ্পুর

শুক্রবার সকাল থেকে উপোস করে মন্দির প্রতিষ্ঠার পুজোয় বসেছিলেন বছর পঁচিশের পাপ্পু। যজ্ঞেও। পুরোহিত রামনাথ পাণ্ডে বলেন, ‘‘ধর্ম তো মানুষে মানুষে ভেদ করে না।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৩
আশীর্বাদ: মন্দিরে পাপ্পু। নিজস্ব চিত্র

আশীর্বাদ: মন্দিরে পাপ্পু। নিজস্ব চিত্র

পাড়ার হনুমান মন্দিরটি সংস্কার করার ইচ্ছে তাঁর অনেক দিনের। শেষ পর্যন্ত ব্যবসার আয় থেকে সেই কাজের পুরো খরচটাই দিয়ে দিলেন পাপ্পু। মহম্মদ পাপ্পু। পুরুলিয়া শহরের কর্পূরবাগান এলাকার একমাত্র সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলে। বাঁধানো ছবির জায়গায় এ বারে মূর্তিতে পুজো হবে ভেবে খুশি এলাকা।

শুক্রবার সকাল থেকে উপোস করে মন্দির প্রতিষ্ঠার পুজোয় বসেছিলেন বছর পঁচিশের পাপ্পু। যজ্ঞেও। পুরোহিত রামনাথ পাণ্ডে বলেন, ‘‘ধর্ম তো মানুষে মানুষে ভেদ করে না। বাধাটা কোথায়?’’ আর পুরুলিয়া বড় মসজিদের ইমাম জয়নুল আবেদিন বলছেন, ‘‘আমাদের বাংলার সংস্কৃতিটা আসলে সম্প্রীতির। পাপ্পু সেটাই দেখালেন।’’

পাপ্পুর কথায়, ‘‘কেউ বলেন হিন্দুরা সঙ্কটে। কেউ বলেন সংখ্যালঘুরা। আসল সঙ্কট তো আমাদের প্রিয় দেশটারই।’’

শহরের প্রান্তে ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কর্পূরবাগান এলাকা। বছর পনেরো হল বসতি বেড়েছে। ওই সময়েই সুফলপল্লি ছেড়ে পাপ্পুরা উঠে এসেছিলেন এখানে। পাড়ার অনেক পরিবারই দিন আনা দিন খাওয়া। ছোট্ট মন্দিরে হনুমানের ছবি রেখে পুজো হতো। পাপ্পুর উদ্যোগে মাস খানেক আগে শুরু হয় সংস্কার। পুজো কমিটির সেক্রেটারি রাজা রাম বলেন, ‘‘ও আমার প্রিয়বন্ধু। অনেক দিন ধরেই বলত, মন্দিরটা বড় করে বানাতে চায়।’’ স্থানীয় ক্লাবের সদস্য গৌতম বাউড়ি জানান, ইচ্ছেটা তাঁদেরও ছিল। কিন্তু টাকাকড়ি কোথা থেকে আসবে ভেবে এগোতে পারছিলেন না।

বাবা মহম্মদ আইনুল জমি-বাড়ির দালালি করেন। ছ’ভাইয়ের মধ্যে ৩ জন বাইরে কাজ করতে চলে গিয়েছেন। স্থানীয় গিরিশচন্দ্র হাইস্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন পাপ্পু। টাকার অভাবে আর এগোতে পারেননি। এক ভাইয়ের সঙ্গে সাউন্ড বক্স ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করেন। একটা সময় গিয়েছে, ভরপেট খেতে পাননি।

হালে অবস্থা কিছুটা ফিরেছে। তাই ইচ্ছেপূরণ করে ফেললেন। পাপ্পু বলছেন, ‘‘যাঁদের সঙ্গে রোজ দিন কাটে, তাঁদের আনন্দ, দুঃখ, উৎসবের কিছুটা তো আমারও। একে অন্যের পাশে থাকাটাই আমাদের ধর্ম।’’

Communal Harmony Hanuman Temple Hindu Muslim মহম্মদ পাপ্পু হনুমান মন্দির
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy