Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
NEET

NEET Candidate: ছোটদের সাহায্য করতে চান ‘নিট’ পাশ দুই ছাত্রী

সোহিনী ও সুশান্তিকা আকুই লাগোয়া পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বোঁয়াই গ্রামের বাসিন্দা।

প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দুই ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র

প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দুই ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইন্দাস শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২২ ০৭:২১
Share: Save:

দু’জনই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে লড়াই করে সর্বভারতীয় ‘নিট’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। এ বার গ্রামের স্কুলের অন্য পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে নিজেদের বই-খাতাপত্র স্কুলকে দিলেন বাঁকুড়ার ইন্দাসের আকুই ইউনিয়ন হাইস্কুলের সদ্য প্রাক্তন দুই ছাত্রী সোহিনী দত্ত ও সুশান্তিকা কাঁড়ি। সময় করে স্কুলের ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ ক্লাস নিতেও তাঁরা রাজি বলে জানিয়েছেন।

সোহিনী ও সুশান্তিকা আকুই লাগোয়া পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বোঁয়াই গ্রামের বাসিন্দা। সুশান্তিকার বাবা বংশিবদন কাঁড়ি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মতো গ্রামের মানুষজনকে ভাল চিকিৎসার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। আমার ছোট বোন বিনা চিকিৎসায় মারা যান। তখনই ঠিক করি, মেয়েকে ডাক্তার হতে উৎসাহ দেব। গ্রামে ডাক্তার প্রয়োজন।’’ সুশান্তিকা নিট-এ ৪৯৭ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি জানান, যে কোনও অসুবিধায় স্কুলের শিক্ষকদের পাশে পেয়েছেন। ডাক্তারি পাশ করে গ্রামে চিকিৎসা করতে চান।

কৃষক পরিবারের মেয়ে সোহিনী জানান, বেশির ভাগ বিষয়ে স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্য নিয়েই তৈরি হয়েছিলেন ‘নিট’ পরীক্ষার জন্য। প্রধান শিক্ষক সুরজিৎ দোলুই বিশেষ ভাবে উৎসাহ দিতেন। সোহিনী নিট-এ ৫৭৫ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। পড়ার সুযোগ পেয়েছেন কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে। তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষকদের সাহায্য ও উৎসাহ ছিল বলেই এই লড়াই করতে পেরেছি।’’ তাঁরও কথা, ‘‘গ্রামের মানুষের জন্যই ডাক্তার হতে চাওয়া। ডাক্তার হয়ে গ্রামেই ফিরব।’’ তাঁর মা মমতা দত্ত বলেন, ‘‘গ্রামের মেয়েদের পড়াশোনার জন্য প্রচুর লড়াই করতে হয়। ভাল জায়গায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার সামর্থ্য আমাদের ছিল না। তবু মেয়ে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে।’’

দুই ছাত্রীই জানান, স্কুলের নিচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করতে চান। তাঁদের কথায়, ‘‘গ্রামে থেকে সর্বভারতীয় পরীক্ষার প্রস্তুতি সহজ নয়। তাই এই লড়াইয়ে গ্রামের ছেলেমেয়েদের পাশে থাকতে চাই।’’ আকুই ইউনিয়ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরজিৎ দোলুই বলেন, ‘‘দুই ছাত্রী দেখিয়েছে, গ্রাম থেকে পড়াশোনা করেও ‘নিট’ উত্তীর্ণ হওয়া যায়। করোনার সময়েও ওরা স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পড়া চালিয়ে গিয়েছে। এখন গ্রামের ভাইবোনেদের পাশে থাকতে চেয়েছে। ওঁদের প্রতি শুভেচ্ছা রইল।’’ সম্প্রতি স্কুল থেকে দুই ছাত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে, জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NEET Medical Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE