Advertisement
E-Paper

দখলের রাজনীতি আর না

এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরকে রুখতে সিপিএমের সংগঠন শক্তিশালী হওয়া দরকার বলে এ দিনও দাবি করেছেন জেলা তৃণমূলের বহু নেতাই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৯ ০৩:৪০
জমায়েত: বাঁকুড়ার মাচানতলার সভায় বক্তা মন্ত্রী। তাঁর ছবি তুলতে হাতে হাতে মোবাইল। নিজস্ব চিত্র

জমায়েত: বাঁকুড়ার মাচানতলার সভায় বক্তা মন্ত্রী। তাঁর ছবি তুলতে হাতে হাতে মোবাইল। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত ভোটে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাঁকুড়া জেলার সিংহ ভাগ আসন জিতেছিল তৃণমূল। তা নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়েনি রাজ্যের শাসকদলের। সেই সময়ে জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক ছিলেন সাংসদ তথা যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে এই জেলায় ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। তারপরেই নতুন জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়া মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ফরমান— ‘দখলের রাজনীতি’ আর নয়। সমস্ত রাজনৈতিক দলকেই দলীয় কর্মসূচি করার অধিকার দিতে হবে। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার মাচানতলার পথসভায় শুভেন্দুর দলীয় কর্মীদের দেওয়া এই বার্তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।

এ দিন তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রা কর্মসূচির সমাপ্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাঁকুড়া শহরে মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিল শেষে বিকেলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, “দখলের রাজনীতি নয়, কেবল আমাদেরই অফিস থাকবে অন্যদের থাকবে না এই নীতি নয়। সবাই থাকবেন, সবাই মিটিং-মিছিল করবেন। কেউ ঘরছাড়া হবে না। বাঁকুড়ায় এ বার এই রাজনীতি শুরু হোক।”

ঘটনা হল, গত লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলার দু’টি কেন্দ্রে তৃণমূলের পরাজয়ের কারণ হিসেবে দলের নেতারা সিপিএমের ভোট ব্যাঙ্কের ধস-কেই দায়ী করেছিলেন। মাসখানেক আগে বাঁকুড়ার রবীন্দ্র ভবনে দলীয় সভা করতে এসে শুভেন্দুও দাবি করেছিলেন, সিপিএম নিজের ভোট ধরে রাখতে পারলে তৃণমূলই জিতত। জেলা তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকেও ঘনিষ্ঠ মহলে বলতে শোনা গিয়েছে, বিরোধী দল সিপিএম শক্তিশালী হলে বিজেপির উত্থান আটকানো যেত।

এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরকে রুখতে সিপিএমের সংগঠন শক্তিশালী হওয়া দরকার বলে এ দিনও দাবি করেছেন জেলা তৃণমূলের বহু নেতাই। জেলার রাজনীতির ওঠাপড়ার নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, লোকসভা ভোট পর্যন্ত জেলায় তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা নেতারা বিরোধী শূন্য করার লক্ষ্যেই কাজ করতেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে তাঁরা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার বেশির ভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসনে বিরোধীদের প্রার্থী না থাকায় ভোট না হওয়ার নজির তুলে ধরছেন।

যদিও জেলা তৃণমূলের নেতাদের দাবি, তৃণমূল বরাবরই গণতন্ত্রে বিশ্বাস রেখেই রাজনীতি করেছে। শুভেন্দুর মুখেও এ দিন গণতান্ত্রিক পথে লড়াই করার কথা উঠে এসেছে। শুভেন্দুও দাবি করেন, “উন্নয়নমূলক কাজ করে এবং মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিবিড় প্রচার করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমরা আমাদের হারানো ভোট ব্যাঙ্ক পুনরুদ্ধার করব।”

যদিও শুভেন্দুর এ দিনের বক্তব্যকে তুলে ধরে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, “২০১১ সাল থেকে এত দিন বিরোধীদের পার্টি অফিস দখল করা থেকে ভোটে প্রার্থী হতে না দেওয়া— কী করেনি তৃণমূল। এখন ঠেলায় পড়ে ওদের বোধোদয় হয়েছে।” অমিয়বাবুর সংযোজন: “ভারত বহুদলীয় গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করার লক্ষ্যে হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছে তৃণমূল। দেরিতে হলেও ওদের এই শিক্ষা পাওয়াটা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল।”

বাঁকুড়ার সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি সুভাষ সরকারের অভিযোগ, “মুখে যতই ওঁনারা গণতন্ত্রের কথা বলুন, জেলা বা রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর পুলিশ ও প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। তাঁরা ভাবছেন সিপিএমকে চাঙ্গা করে বিজেপির ভোট ভাগ করবেন। কিন্তু মানুষ এই লোকসভা ভোট থেকে যে পরিবর্তনের ধারা শুরু করেছেন, তা বিধানসভা ভোটেও বজায় রাখবেন।”

Bankura Subhendu Adhikari District Obswerver TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy