Advertisement
১৯ মে ২০২৪

তিন লক্ষাধিক টিকিট বিক্রি, দুয়োরানি লোহাপুর স্টেশন

ক্ষোভ বাড়ছে নলহাটি-আজিমগঞ্জ রেললাইনে লোহাপুর স্টেশন নিয়ে। এলাকার বাসিন্দারা সম্প্রতি নলহাটি ২ ব্লক নাগরিক কমিটির মাধ্যমে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের কাছে লোহাপুর স্টেশনে বেশ কিছু পরিষেবা চালু করার জন্য দাবি জানিয়েছেন।

স্টেশন চত্বর। ছবি:সব্যসাচী ইসলাম।

স্টেশন চত্বর। ছবি:সব্যসাচী ইসলাম।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
নলহাটি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

ক্ষোভ বাড়ছে নলহাটি-আজিমগঞ্জ রেললাইনে লোহাপুর স্টেশন নিয়ে। এলাকার বাসিন্দারা সম্প্রতি নলহাটি ২ ব্লক নাগরিক কমিটির মাধ্যমে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের কাছে লোহাপুর স্টেশনে বেশ কিছু পরিষেবা চালু করার জন্য দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে লোহাপুর স্টেশনের উপর দিয়ে যাতায়তকারী গণদেবতা ও কবিগুরু এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির স্টপেজের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সংগঠনের পক্ষে তাঁদের দাবির সমর্থনে চলতি বছর জুলাই মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত— এই তিন মাসে লোহাপুর স্টেশন থেকে সাধারণ টিকিট বিক্রি এবং রিজার্ভেশন টিকিট বিক্রির পরিমাণের কথা উল্লেখ করেছেন।

রেল নিরুত্তর!

নলহাটি ২ ব্লক নাগরিক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ শা এহেসান আলি বলেন, ‘‘লোহাপুর স্টেশন হয়ে নলহাটি ১ ব্লক ও নলহাটি ২ ব্লকের বাসিন্দারা চলাচল করে থাকেন। এ ছাড়া মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি, নবগ্রাম ব্লকের বাসিন্দারাও যাতায়াত করে থাকেন। লোহাপুরে নলহাটি ২ ব্লক অফিস ছাড়াও, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির সাব স্টেশন ছাড়াও বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্র আছে।’’

এই স্টেশনের সংস্কার হয়েছে। হয়েছে ফুট ওভার ব্রিজও। কিন্তু স্টেশন এলাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। যাত্রী সুরক্ষা বা পরিষেবার জন্য দীর্ঘ দিন থেকে দাবি জানিয়েও কোনও পরিষেবা চালু করা যায়নি। পানীয় জলের ব্যবস্থা নাই, নাই কোনও শৌচালয়, প্রস্রাবাগার। নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও। রেলকর্মীদের দাবি, ‘‘স্টেশনের জন্য ব্যবহৃত জেনারেটর ঠিক মতো কাজ করে না। পৃথকভাবে রিজার্ভেশন কাউন্টার নাই। ট্রেন চলাচলের বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য স্টেশনে কোনও টেলিফোনও নাই!

পরিস্থিতি এমনই, স্টেশনকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নেই কোনও ব্যবস্থা। ফলে বেশিরভাগ সময়ই স্টেশন এলাকাজুড়ে নোংরা-আবর্জনা পড়ে থাকে। সে সব পেরিয়েই যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়। রাতের দিকে রেলস্টেশনে কোনও রেলপুলিশ কর্মী থাকেন না। ফলে যাত্রীরা নিরাপত্তা হীনতায় ভোগেন। নাগরিক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মসিউর রহমান ববি বলেন, ‘‘লোহাপুর স্টেশন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী লোহাপুর স্টেশনে গত জুলাই মাসে সাধারণ টিকিট বিক্রি সংখ্যা ৩ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা। অগস্ট ৩ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৩ লক্ষ ৩ হাজার টাকা। এ ছাড়াও রেল স্টেশন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের জন্য সংরক্ষিত টিকিট বিক্রি থেকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আয় করেছেন জুলাই মাসে ৬ লক্ষ ৪৭ হাজার ২৯০ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৭ লক্ষ ১৬ হাজার ৭০ টাকা। তাহলে কেন এই স্টেশনকে নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হবে না!’’

সৈয়দ শা এহেসান আলি, মসিউর রহমান ববি শুধু নয়। এলাকাবাসীর দাবি, লোহাপুর স্টেশনের উন্নতির পাশাপাশি গনদেবতা ও কবিগুরু এক্সপ্রেস এই ট্রেন দুটির স্টপেজ দেওয়া হোক। লোহাপুর স্টেশন ম্যানেজার বরুণ দাস বলেন, ‘‘লোহাপুর স্টেশনের উপর দিয়ে ছয় জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন এবং দু’টি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। স্টেশনের পরিকাঠামোর দাবি-সহ এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির স্টপেজের দাবিতে এলাকাবাসী দীর্ঘ দিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন। সেই দাবির ব্যাপারে শীর্ষকর্তাদের জানানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lohapur Station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE