Advertisement
E-Paper

হাইকোর্ট তলব করতেই সবং থানার ওসি ‘ক্লোজ’

সবং থানার ওসি দয়াময় মাঝিকে ‘ক্লোজ’ করা হল মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে। গাছ কাটার মামলায় সবং থানার ওসি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে তলব করেছে হাইকোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৭

সবং থানার ওসি দয়াময় মাঝিকে ‘ক্লোজ’ করা হল মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে। গাছ কাটার মামলায় সবং থানার ওসি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে গিয়ে তাঁদের জানাতে হবে, সবংয়ের বলপাইয়ে বেআইনি ভাবে গাছ কাটার ঘটনায় অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার আগেই ‘ক্লোজ’ করা হল এই পুলিশ আধিকারিককে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে জেলা পুলিশ সুপার ভারতীদেবীর মন্তব্য, “আমি কিছু বলব না।’’ এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি দয়াময়বাবুও। জেলা পুলিশের এক কর্তা শুধু বলেন, “এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত।”

পুলিশ সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগেই মেদিনীপুরে পুলিশের এক বৈঠক হয়। সেখানে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডেপুটি পুলিশ সুপারদের পাশাপাশি বিভিন্ন থানার আইসি, ওসি-রা। পুলিশের এক সূত্রে খবর, বৈঠকে জেলা পুলিশ সুপার বুঝিয়ে দেন, সবংয়ের বলপাইয়ের ঘটনায় তিনি বেশ অসন্তুষ্ট। সবং থানার ওসিকে কড়া বার্তা দেন তিনি। ওই বৈঠকের একদিন পরই দয়াময়বাবুকে সবং থেকে সরিয়ে মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করা হয়। পুলিশের এক সূত্রে খবর, বিভাগীয় নির্দেশ পেয়ে সোমবারই সবং ছেড়েছেন দয়াময়বাবু। তবে মঙ্গলবার নতুন কেউ সবং থানার ওসি-র দায়িত্ব নেননি। আপাতত সবং থানার দায়িত্ব সামলাবেন ডেবরার সিআই ননীগোপাল দত্ত।

বলপাইয়ের গাছ কাটার ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার এবং সবংয়ের ওসিকে হাইকোর্ট তলব করায় জেলায় আলোড়ন পড়েছে। আসরে নেমেছে তৃণমূলও। দলের এক সূত্রে খবর, গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তাই মামলাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে মীমাংসার চেষ্টা চালাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। তারই মধ্যে সবং থানার ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ভারতীদেবীর মুখ রক্ষা করতেই তড়িঘড়ি অধঃস্তন আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল। সবংয়ের কংগ্রেস নেতা চিরঞ্জীব ভৌমিক বলেন, “সবংয়ের এই ঘটনার ক্ষেত্রে শুধু ওসিকে দোষ দেওয়া যায় না। ওসি তো নিরুপায়। তিনি কাজ করেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে। সবংয়ের এই ঘটনার ব্যাপারে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কিছু জানতেন না, এটা হতে পারে না।” সবংয়ের আর এক কংগ্রেস নেতার কটাক্ষ, “ওসিকে সরিয়ে দেওয়ার পর জেলা পুলিশ সুপার অন্তত হাইকোর্টে গিয়ে বলতে পারবেন, তিনি কড়া পদক্ষেপ করেছেন।”

গাছ কাটার ঘটনাটি গত অক্টোবরের। বলপাইতে রাস্তা তৈরির জন্য আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ কাটার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল বন দফতরের কাছে। বন দফতর মোট ৯৯৬টি গাছ কাটার অনুমতি দেয়। কিন্তু অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান সন্দীপ ঢাল প্রায় দু’হাজার গাছ কেটে ফেলেন। অতিরিক্ত গাছ বিক্রির টাকা প্রধান তছরুপ করেছেন বলেও অভিযোগ। গ্রামবাসীদের একাংশ জেলার বন কর্তার কাছে বিষয়টি জানান। কিন্তু প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারপরই হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন জনা পনেরো গ্রামবাসী। বলপাইয়ের প্রধান সন্দীপ ঢালের অবশ্য দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই লোকজন চক্রান্ত করছে। বন দফতরের অনুমতির বাইরে একটাও বেশি গাছ কাটা হয়নি।

Sabang Police officer close notice Illegal tree triming Dayamoy Majhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy