E-Paper

শনিতে শুনানি, চিন্তায় ভোটার

সোমবার দুবরাজপুরের ব্লক অফিসে ডাকা হয়েছে। বিরক্ত পারেশা ও তাঁর পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, ভুল তাঁদের নয়।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:০২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বিরক্তি এবং উদ্বেগ— দু’টিই কাজ করছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের প্রক্রিয়ায় (এসআইআর) শুনানির নোটিস পাওয়া ভোটারদের একাংশের মধ্যে।

সিউড়ি বিধানসভা এলাকার চিনপাই নারায়ণ গ্রামের বাসিন্দা পারেশা বিবি। তাঁর বয়স আসলে ৮০। কিন্তু ভোটার কার্ডে হয়ে গিয়েছে ৩০ বছর। যেহেতু তাঁর সন্তানদের বয়সের সঙ্গে কোনও সাযুজ্য নেই, ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপেন্সি’-র জন্য ‘নো ম্যাপিং জ়োনে’ পড়ে গিয়েছেন পারেশা। তাঁকে সোমবার দুবরাজপুরের ব্লক অফিসে ডাকা হয়েছে। বিরক্ত পারেশা ও তাঁর পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, ভুল তাঁদের নয়। অথচ আট কিমি দূরে এই বয়সে পারেশাকে যেতে হবে।

দুবরাজপুর বিধানসভা এলাকার পাকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ সামসুদ্দিনও ‘নো-ম্যাপিং’ তালিকায়। তাঁর দাবি, ‘‘২০০২ সালের আগেই আমার মা, বাবা— দু’জনেই মারা গিয়েছেন। তার বহু আগেই ঠাকুর্দা, ঠাকুমা গত হন। আমি নাম তুলিয়েছি ২০০৬-এ। ২০০২-এ দাদার নাম ছিল। কিন্তু প্রোজ়োনি ম্যাপিং করা যায়নি। ফলে শুনানিতে যেতে হবে। খেটে খাই, এক দিন কাজ কামাই। তার উপরে কী জিজ্ঞাসা করবে, কী দেখতে চাইবে, ঠিক মতো জানি না।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, শুনানি শুরু হচ্ছে শনিবার। ডাক পেয়েছেন নো-ম্যাপিং তালিকায় থাকা বহু ভোটার। জেলায় নো ম্যাপিং তালিকায় আছেন ৬৫ হাজার ১৭৮ জন। তাঁদের অভিযোগ, নথি থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত কারণে ম্যাপিং করাতে পারেননি অনেকে। করাতে গিয়ে ‘নো রেকর্ড ফাউন্ড’ দেখিয়েছে।

প্রশাসন সূত্রেও খবর, ২০০২-হয় ভোটার তালিকায় নিজের অথবা বাবা বা মায়ের নাম থাকা ভোটারদের একা‌ংশকে প্রযুক্তিগত সমস্যায় ম্যাপিং করাতে পারেননি বিএলও-রা। এর মধ্যে কিছু ভোটারকে ম্যাপিং করানো যায়নি, বাংলা চার ও ইংরেজি আট বা এক ও নয় সংখ্যার গড়নে মিলে। এ নিয়ে একাধিক অভিযোগ কমিশনে গিয়েছে। নতুন করে তাঁদের তালিকাও এক্সেল শিটে তৈরি করে জমা নিয়েছে কমিশন। জানা গিয়েছে, কমিশন বিএলও-দের এমন ভোটারদের অথেন্টিকেট করতে বলছে। ফলে, এঁদের নোটিস হোল্ড করা হয়েছে। তবে যাঁদের কাছে নোটিস এর মধ্যেই পৌঁছছে, তাঁদের শুনানি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত কমিশন নেয়— তা দু’ চার দিনের মধ্যেই জানা যাবে।

জানা গিয়েছে, প্রতিটি ব্লকে এইআরও ধরে টেবিল থাকছে। প্রতি দিন ৫০ থেকে ৮০টি নোটিসের শুনানি হবে। সেখানেই ভোটারের বৈধতা যাচাই করবেন এইআরও-রা। জন্মের নথি, জমির মালিকানার নথি, উত্তরাধিকার সংক্রান্ত নথি, স্থানান্তরের নথি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে নথির সত্যতা যাচাই করবেন মাইক্রো অবজ়ার্ভারেরা। প্রতি বিধানসভা এলাকায় ১০ জন এইআরও আছেন। থাকছেন সমসংখ্যক মাইক্রো অবজ়ার্ভারও।

বিএলওদের একাংশ জানান, এমন নয় যে ‘সন্দেহভাজন’ ভোটার নেই। তবে ছোট ভুল বা প্রযুক্তিগত ভুলের কারণে বহু ভোটারকে শুনানিতে ডাকা হবে। কারও কারও ক্ষেত্রে যা সমস্যার। যদিও জেলা প্রশাসনের এক কর্তা আশ্বস্ত করেন, ‘‘শুনানিতে কাউকে অযথা হয়রান করা হবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy