Advertisement
E-Paper

বাজল বক্স বিষ্ণুপুরে

পরীক্ষার্থীরা যাতে মাধ্যমিকের আগে শান্তিতে থাকতে পারে, সে জন্য পইপই করে প্রকাশ্য জায়গায় মাইক বাজাতে মানা করেছিল পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:০০
প্রকাশ্যে: বিষ্ণুপুরে ভগৎ সিংহ মোড়ের কাছে সোমবার। ছবি: শুভ্র মিত্র

প্রকাশ্যে: বিষ্ণুপুরে ভগৎ সিংহ মোড়ের কাছে সোমবার। ছবি: শুভ্র মিত্র

পরীক্ষার্থীরা যাতে মাধ্যমিকের আগে শান্তিতে থাকতে পারে, সে জন্য পইপই করে প্রকাশ্য জায়গায় মাইক বাজাতে মানা করেছিল পুলিশ। কিন্তু তার পরেও অভিযো‌গ উঠল। বিশেষত, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। শহর লাগোয়া চৌকান গ্রামে রবিবার রাতভর ‘ডিজে’ বাজিয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের কারও কারও অভিযোগ, উৎপাত চলেছে সোমবার বিকেলেও। সোমবার দুপুরে বিষ্ণুপুর শহরের ভগৎ সিংহ মোড়ে একটি ক্লাব খোলা মঞ্চে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে। ওই এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ। ক্লাবের সম্পাদকের বক্তব্য, ‘‘সন্ধ্যার পরে বক্স বাজাব না।’’

তবে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়, মাধ্যমিকের তিন দিন আগে থেকে প্রকাশ্যে লাউড স্পিকার বাজানো নিষিদ্ধ। দিনে-রাতে কোনও সময়েই বাজানো চলবে না। তার পরেও বিষ্ণুপুরের স্টেশন রোড, বৈলাপাড়া, শিবদাস গার্লস স্কুলের সামনে, নতুনগঞ্জে, কুন্দকুঁদা বাজারের মতো কিছু এলাকা থেকে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ শোনা গিয়েছে।

এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস অবশ্য বলছেন, ‘‘থানায় এই ব্যাপারে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। একই দাবি বাঁকুড়া জেলা পুলিশেরও। বাঁকুড়া পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “সাউন্ডবক্স বাজানো নিয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে পুলিশ এলাকায় টহল দিচ্ছে। কোথাও সাউন্ড বক্স বাজানো হচ্ছে চোখে পড়লেই বন্ধ করা হচ্ছে”। পুলিশের দাবি, এ ভাবে সোমবার গোটা চল্লিশ পুজোর সাউন্ড বক্স বন্ধ করানো হয়েছে। বাঁকুড়া শহরে ঘুরে নুনগোলারোড, পাটপুর, রবীন্দ্রসরণি, লোকপুর এলাকার কয়েকটি পুজোতে রাস্তার পাশেই এ দিন সাউন্ডবক্স বাজতে দেখা গিয়েছে। ওই সমস্ত পুজোর উদ্যোক্তাদের দাবি, খুব কম আওয়াজ করা হচ্ছিল। মণ্ডপের বাইরে কোনও শব্দ শোনা যায়নি। ইন্দাস ও পাত্রসায়র থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি পুজো কমিটিতে সাউন্ডবক্স বাজানো হচ্ছে দেখে সতর্ক করা হয়েছে। এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মার দাবি, কোথাও কোনও অভিযোগ ওঠেনি।

পুরুলিয়ার ছবিটা অবশ্য কিছুটা অন্য রকমের। দুর্গাপুজোর সময়েই বিধি ভেঙে সাউন্ড বক্স বাজানো রুখতে অভিযান করেছিল পুরুলিয়ার বিভিন্ন থানার পুলিশ। আদ্রা, রঘুনাথপুর এলাকা থেকে সাউন্ড বক্স আর মাইক আটক করেছিলেন মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর)। প্রশাসনের দাবি, কড়াকড়ির ফল এই দফাতেও কিছুটা মিলেছে। মানবাজার, ঝালদা, রঘুনাথপুর এবং জেলা সদর পুরুলিয়াতে বিধি ভেঙে মাইক বাজানোর অভিযোগ বিশেষ ওঠেনি। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘আগেই ব্যবসায়ীদের ডেকে বলা হয়েছিল, মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে সরস্বতী পুজো। তাই সাউন্ড বক্স বা মাইক ভাড়া দেওয়া যাবে না।’’ তিনি জানান, যে সমস্ত মাইক ব্যবসায়ীর বৈধ অনুমতি নেই, তাঁদের মাইক ও সাউন্ড বক্স জেলার কয়েকটি থানার পুলিশ পুজোর আগেই আটক করে থানায় নিয়ে এসেছিল।

রবি ও সোমবার জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে, মাইকের ব্যবহার গত বারের তুলনায় অনেকটাই কম। রেল শহর আদ্রা, নিতুড়িয়া, রঘুনাথপুর, মানবাজার, ঝালদার বেশ কিছু এলাকায় বড় পুজো হয়। এ বারেও হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, কোথাও কোথাও মাইক দেখা গিয়েছে। তবে বেজেছে নিচু স্বরে। আদ্রার একটি পুজোর উদ্যোক্তা সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘মাইক ব্যবসায়ীরা বক্স ভাড়া দিতেই রাজি হননি। তাই ঘর থেকে স্পিকার এনে মণ্ডপে বাজিয়েছি।’’

আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার আগে, সোমবার সন্ধ্যার মধ্যেই পুরুলিয়ার প্রায় সমস্ত স্কুলে ও অধিকাংশ মণ্ডপেই প্রতিমা বির্সজন হয়ে গিয়েছে। আগে একাধিক মাইক বাজিয়ে বিসর্জন দেখেছে জেলা। এ বার অনেকে সেটা সাদামাটা ভাবে সেরেছেন বলে দাবি।

Madhyamik Bishnupur Loud Speaker
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy