Advertisement
E-Paper

সিঁড়ি খুলেও রোখা যায়নি ছাদে ওঠা

বাসে সিট না থাকলে তো কথাই নেই। জায়গা থাকলেও বাসের ছাদে চেপে যাত্রা চলছেই। অবস্থা এমনই যে, ছাদে ওঠার সিড়ি খুলেও তা রোখা যায়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৩
যাতায়াত: নিয়ম ভেঙে বাসের মাথায় সফর। বৃহস্পতিবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

যাতায়াত: নিয়ম ভেঙে বাসের মাথায় সফর। বৃহস্পতিবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

বাসে সিট না থাকলে তো কথাই নেই। জায়গা থাকলেও বাসের ছাদে চেপে যাত্রা চলছেই। অবস্থা এমনই যে, ছাদে ওঠার সিড়ি খুলেও তা রোখা যায়নি। বাসের জানালায় পা দিয়ে অনেকেই অনায়াসে উঠে পড়ছেন ছাদে। বিপদের কথা না ভেবে এমন বেপরোয়া যাতায়াত যে ঝুঁকির, পুলিশ-প্রশাসন নানা ভাবে বোঝালেও তা কানে তুলছে কে? এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী করা যায় তা নিয়ে চিন্তায় প্রশাসনও।

বছর দুয়েক আগে রামপুরহাট শহরের ভিতরে ছ’ফুঁকো রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায় লোহার বিমে ধাক্কা লেগে বাসের ছাদে থাকা দুই যাত্রী মারা যান। বিহারের পর্যটক বোঝাই ওই বাসটি সেতুর নীচ দিয়ে যাচ্ছিল। ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিন জন। পরে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, ওই বাসে সিট ফাঁকা ছিল। তার পরেও ছাদে চড়েছিলেন যাত্রীরা। ওই দুর্ঘটনাও যে হুঁশ ফেরায়নি সম্প্রতি এলাকা ঘুরে তার প্রমাণ মিলল। দেখা গেল, দুমকা–রামপুরহাট রুটের বাসগুলিতে এবং রামপুরহাট থেকে নারায়ণপুর বা রামপুরহাট থেকে আয়াষ, বৈধড়া যাওয়ার গাড়িগুলিতে এখনও বাসের মাথায় চেপে লোকজন। তাতে কে নেই? বৃদ্ধ, যুবক সকলেই চেপেছেন বাসে।

রেলসেতুর কাছে দেখা গেল, দুমকা থেকে রামপুরহাট আসা একটি বাস থেকে নিশ্চিন্তপুর স্টপে পনেরো জনেরও বেশি যাত্রী ছাদ থেকে নামছেন। সেতুর নীচ দিয়ে যাওয়ার সময় এক বয়স্ক যাত্রীকে বাসের ছাদে শুয়ে পড়তে দেখা গেল। রেলসেতুর তলা দিয়ে পার হওয়ার পরে ছাদে থাকা বৃদ্ধ আবার উঠে বসলেন। ওই একই বাসস্টপে দেখা গেল, রঘুনাথগঞ্জ-দুমকা রুটের একটি বাসে অনেক যাত্রী জানালার পাশ দিয়ে পণ্য বোঝাই করা সিঁড়ি দিয়ে অবাধে বাসের ছাদে চেপে বসলেন। কেন উঠছেন? এক যাত্রী প্রশ্ন শুনেই যেন অবাক হলেন। উল্টে প্রশ্ন করলেন, ‘‘এখানকার রুটে তো এই ভাবেই বাসে চাপে যাত্রীরা। জানেন না?’’ বাস কনডাক্টরও কোনও গুরুত্ব না দিয়েই যাত্রী ওঠাতে ব্যস্ত রইলেন।

এতো গেল রামপুরহাট শহরের ভিতর দিয়ে যাওয়া রামপুরহাট-দুমকা সড়কের উপর দিয়ে যাওয়া বাসগুলির চিত্র। রানীগঞ্জ–মোড়গ্রাম জাতীয় সড়কের রামপুরহাট শহরের ভিতর দিয়ে যাওয়া বিভিন্ন রুটের বাসের মাথায় যাত্রীদের যাতায়াত করতে দেখা গেল। মাস তিনেক আগে বাসের ছাদে যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধ করতে পরিবহণ দফতরের নির্দেশে বাসের পিছনে সিঁড়ি খুলে দেয় বাস মালিক সমিতি। তবুও পণ্য বোঝাই করা জানালার পাশে থাকা সিঁড়ি দিয়ে যাত্রীরা বিপদের পরোয়া না করেই এখনও ওঠা-নামা করছেন।

বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক জামারুল ইসলাম জানান, পরিবহণ দফতরের নির্দেশে রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে চলাচলকারী সমস্ত বাসগুলির পিছনের সিঁড়ি খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাসের ছাদে যাত্রী ওঠা-নামা কমে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘তবুও কিছু শ্রমিক বা নিত্যযাত্রী, যাঁরা রামপুরহাট বাজারে আনাজ বিক্রি করেন এবং অল্প ভাড়ায় যাতায়াত করেন তাঁরা বাসের মাথায় চেপে যাতায়াত করছেন এ কথা ঠিক। আমরা চাই এগুলোও বন্ধ হোক।’’ পরিস্থিতি বদলাতে বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ছাদে যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধ করতে প্রচার চালানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার পরেও কী রোখা যাবে? রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ্ত সাঁতরাও বলছেন, ‘‘বাসের মাথায় যাত্রী-ওঠা নামা বন্ধ করতে যাত্রী সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পরিবহণ দফতর এবং পুলিশকে নিয়ে নজরদারি বাড়ানো হবে।’’

Trave Roof Top Bus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy