দলমত নির্বিশেষে রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রায় হাঁটলেন বিজেপি ও তৃণমূল নেতৃত্ব। শনিবার যেন মিলন যাত্রার রূপ নিল ঝালদা শহরের শোভাযাত্রাটি। এ দিন বিকেলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের ব্যানারে ঝালদা সত্যভামা স্কুল ময়দান থেকে শুরু হয় ওই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। দলীয় কর্মীদের নিয়ে হাঁটেন পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সভাপতি শঙ্কর মাহাতো। নিজের কর্মীদের সঙ্গে পা মেলান ঝালদা শহর তৃণমূলের সভাপতি চিরঞ্জীব চন্দ্রও।
এমন দৃশ্যে কেউ কেউ রাজনৈতিক সমীকরণ খুঁজলেও তৃণমূল, বিজেপি দুই দলের নেতৃত্বই প্রাধান্য দিচ্ছেন উৎসবকে। শঙ্কর বলেন, “কোনও দলের নেতা হিসেবে নয়, শান্তিপূর্ণ উৎসব পালনের বার্তা দিতে পথে নেমেছি।” চিরঞ্জীবের কথায়, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে উৎসবে শামিল হয়েছেন।”
অন্য দিকে পূর্ব পরিকল্পনা মতোই গোটা শোভাযাত্রা জুড়ে কড়া নজরদারি চালিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। এক কথায় দু’হাতে আগলে শোভাযাত্রা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ ও র্যাফ বাহিনী। আকাশ পথে নজর রাখছিল ড্রোন। পুলিশের বিভিন্ন পদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন নিজে শোভাযাত্রার নিরাপত্তার তদারকি করেন।
শহরের বাসস্ট্যান্ড পেরিয়ে বাঁধাঘাটের কাছে ফের শহরের গলিপথের দিকে ঘুরে যায় মিছিলটি। উদ্যোক্তাদের দাবি, হাজার আটেকের বেশি লোকজন শোভাযাত্রায় যোগ দেন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সকালের দিকে পুরুলিয়া শহরে একটি শোভাযাত্রা আয়োজন করে সঙ্কটমোচন ভূতনাথ মন্দির কমিটি। শহর পরিক্রমা করে গোশালায় হনুমান মন্দিরে শেষ হয় মিছিল।
অন্য দিকে বাঁকুড়া শহর-সহ জেলার নানা প্রান্তে হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে এ দিন বিভিন্ন যানবাহনে গেরুয়া পতাকা বাঁধার কর্মসূচি নেয় বিজেপি। বাঁকুড়ার সতীঘাট এলাকায় বিভিন্ন গাড়িতে গেরুয়া পতাকা বাঁধেন বিজেপি কর্মীরা। বড়জোড়ার মালিয়াড়ায় বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তিকে একটি ডাম্পারের ইঞ্জিনে চড়ে পতাকা বাঁধতে দেখা যায়। বিষ্ণুপুর, সোনামুখীর মতো পুরশহরের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্লক শহরেও ওই কর্মসূচি হয়েছে বলে দল সূত্রে খবর।
সকাল থেকেই বাঁকুড়ার সতীঘাটের হনুমান মন্দিরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। শহরের বিভিন্ন হনুমান মন্দিরে ছিল বিশেষ পুজোর আয়োজন। জেলার কয়েকটি জায়গায় ছোট ছোট মিছিল করে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মিছিলগুলি হয়েছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)