E-Paper

জীর্ণ হয়েছে ভবন, ছাত্রছাত্রীর অভাবে ধুঁকছে স্কুল

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ২০১৮ সালে পড়ুয়ার সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৫ জন। স্কুলের প্রধান শিক্ষকও অবসান নেন। তার পরে থেকেই পড়ুয়া সংখ্যাটা দ্রুত কমতে থাকে।

বাসুদেব ঘোষ 

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০১
ফাঁকা শ্রেণিকক্ষ। পাড়ুইয়ের খঞ্জনপুরে উত্তর চণ্ডীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

ফাঁকা শ্রেণিকক্ষ। পাড়ুইয়ের খঞ্জনপুরে উত্তর চণ্ডীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

গ্রামবাসীদের স্বেচ্ছায় দান করা জায়গায় তৈরি হয়েছিল স্কুলটি। ভবনটি এখন জীর্ণ হয়েছে। সেখানে শিক্ষক আছে। তবে ছাত্রছাত্রী নেই। বেশির ভাগ দিন স্কুল বন্ধই থাকে বলে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ। পাড়ুই থানার সাত্তোর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তর চণ্ডীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা এখন এমনই। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সরকারি উৎসাহের অভাবের কারণেই স্কুলটির এমন হাল।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে স্কুলে এক জন শিক্ষক ও এক জন শিক্ষিকা রয়েছেন। খাতায়-কলমে পড়ুয়ার সংখ্যা মাত্র চার জন। তারা স্কুলে আসে না। পড়ুয়া না থাকায় মিড-ডে মিলও প্রায় বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৪ সালে সর্বশিক্ষা মিশনের আর্থিক সহায়তায় কিছু সংখ্যক পড়ুয়াকে নিয়ে পাড়ুই থানার সাত্তোর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত খঞ্জনপুর গ্রামে প্রাথমিক স্কুলটি চালু হয়। মাঝে স্কুলের দু’টি শ্রেণিকক্ষ একেবারে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ায় সর্বশিক্ষা মিশনের সাহায্যে ২০১০-১১ সালে স্কুলের দ্বিতল শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা হয়। সে সময়ে ৩০-৩৫ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে চলছিল স্কুলটি। ছিলেন তিন জন শিক্ষকও।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ২০১৮ সালে পড়ুয়ার সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৫ জন। স্কুলের প্রধান শিক্ষকও অবসান নেন। তার পরে থেকেই পড়ুয়া সংখ্যাটা দ্রুত কমতে থাকে। ২০২৩ সালে এই স্কুলে মাত্র সাত জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে। চলতি বছরে মাত্র পাঁচ জন ভর্তি হন। বেশ কিছু দিন আগে দুর্ঘটনায় এক ছাত্রের মৃত্যু হওয়ার পরে পড়ুয়া সংখ্যা দাঁড়ায় চার জনে। কিন্তু তারাও নিয়মিত স্কুলে না-আসায় বর্তমানে স্কুলটির পঠনপাঠন কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

স্থানীয়েরা জানান, নিয়মিত ছাত্রছাত্রী না-আসায় শিক্ষকেরাও নিয়মিত স্কুলে আসেন না। স্কুল চত্বর পার্থেনিয়াম-সহ আগাছায় ভরে উঠেছে। ক্লাসের ব্ল্যাকবোর্ড, বসার বেঞ্চও ঢেকেছে ধুলোয়। স্থানীয় বাসিন্দা মিতালি বাগদি, তপন বাগদিরা বলেন, “স্কুলটি দীর্ঘদিন ধরে একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্কুলটিকে ঠিকমতো চালু করার ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না।”

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা প্রতিমা মেটে বলেন, “আমরাও চাই স্কুলটি বেঁচে থাকুক। যার জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় আবেদন জানিয়েছি।” স্কুলে না-আসা প্রসঙ্গে শিক্ষিকা বলেন,“এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা নিয়মিত স্কুলে এসে থাকি। তবে এক জন ছাত্রছাত্রী স্কুলে না-আসায় আমরা কিছুটা আগে বাড়ি চলে যাই।”

প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক বলেন, “কেন পড়ুয়া সংখ্যা কম, কেন পড়ুয়ারা নিয়মিত স্কুলে আসছে না, সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

parui

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy