সমবেত: সিউড়ির আবদারপুরে। নিজস্ব চিত্র
‘আমরা মদ বন্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছি। কিছুটা সফল। তবে আপনারা পাশে দাঁড়ান।’— মদের নেশার বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার করতে সোমবার সকালে এ ভাবেই পুলিশের সাহায্য চাইলেন সিউড়ির আবদারপুর আদিবাসীপল্লির শ’খানেক মহিলা। তাঁদের আশ্বস্ত করেছে পুলিশও।
সিউড়ি ১ ব্লকের মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের এই আদিবাসীপল্লিতে গোটা ষাটেক পরিবারের বাস। এঁদের একাংশ জানালেন, শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত এই পল্লির প্রধান শক্র জাতীয় সড়কের ধারে চলতে থাকা মদের বেআইনি কারবার। সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরে সংসারের অশান্তির মূলে যে মদ, সেটা বিলক্ষণ বুঝেছিলেন গ্রামের মালতি মাড্ডি, মহিষা হাঁসদা, সিধুমণি হাঁসদা, লক্ষ্মী টুডু, জবা মারাণ্ডিরা। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই খেতমজুর। বছরের পর বছর ধরে চোলাইয়ের রমরমায় গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। সঙ্গে ছিল দিশি মদ। আর সেখান থেকে মদ কিনে নেশার আবর্তে পড়ে যাচ্ছিলেন বাড়ির পুরুষেরা।
মহিলারা বলছেন, ‘‘বাড়ির পুরুষেরা চোলাই খাবে। রাস্তাঘাটে পড়ে থাকবে। বাড়ি ফিরে বউ-মেয়েকে পেটাবে— এমনটাই রোজনামচা হয়ে গিয়েছিল!’’ অতিরিক্ত মদ খাওয়ার ফলে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এমন নজিরও রয়েছে। তবু ছবিটা বদলায়নি। আরও উদ্বেগের হল, কমবয়সী ছেলেরাও নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এক বধূর কথায়, ‘‘বাড়ির ছোট ছেলেরাও আসক্ত হতে শুরু করেছে দেখে আমরা রুখে দাঁড়াই।’’
স্থানীয়দের একটি অংশের দাবি, এলাকায় অন্তত ৫-৬টি মদের ঠেক রয়েছে। অনুরোধ করার পরেও দোকানগুলি মদ বিক্রি বন্ধ করেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। সেটা রুখতেই পুলিশের সাহায্য চাওয়া। দলগত ভাবে মদ বিক্রি বন্ধের কথা বলায় দু’একজন কারবার সাময়িক বন্ধ রাখলেও, অনেকেই রাতের অন্ধকারে মদ বিক্রি করছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁরা। সকলেরই অভিযোগ, ‘‘যত গোলমাল ওই মদে। ওটা রোখা গেলে এলাকায় শান্তি যেমন ফিরবে, তেমনই স্বাচ্ছন্দ্য আসবে সংসারেও।’’
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, মহিলাদের আর্জি মতোই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy