উদ্যানপালন দফতরের সৌজন্যে তীব্র গরমে চুটিয়ে জেলার আমের স্বাদ নিয়েছেন বাঁকুড়াবাসী। আমের পরে এ বার ফলপ্রেমীদের জন্য জেলার মুসাম্বির সম্ভার সাজিয়ে বসতে উদ্যোগী হয়েছে দফতর। ক’দিনের মধ্যেই দফতরের প্রাঙ্গণে স্টলে মুসাম্বি বিক্রি শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।
বাঁকুড়ার উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক মলয় মাজি বলেন, “আম বিক্রি করতে নেমে ভালই সাড়া পাওয়া গিয়েছে ক্রেতাদের থেকে। উপকৃত হয়েছেন বহু আম চাষি। আমের মতো জেলার মুসাম্বিও যাতে ক্রেতাদের কাছে সহজলভ্য হয়, সে জন্যই এই উদ্যোগ।’’
উদ্যানপালন দফতরের ফিল্ড অফিসার সঞ্জয় সেনগুপ্ত জানান, গত কয়েক বছরে বাঁকুড়ায় মুসাম্বি চাষের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। উদ্যানপালন দফতরের তালড্যাংরা ফার্ম হাউসে ২০ বিঘা জমিতে মুসাম্বি চাষ করেছে দফতর। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও মুসাম্বি চাষ হয়েছে। সঞ্জয়বাবু বলেন, “জেলায় সরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে মুসাম্বি চাষ হয়েছে এ বার। ফলনও হয়েছে বেশ ভাল।”
রাজ্য ও কেন্দ্রীয় আম মেলায় বাঁকুড়ার আমের স্বাদ নজর কেড়েছিল। ২০১৪ সালে রাজ্য আম মেলায় বাঁকুড়ার আম স্বাদের বিচারে প্রথম হয়েছিল। সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার পরেই বাঁকুড়ার আমের কদর বেড়ে যায় বাজারে। চাহিদাও বাড়তে থাকে হুহু করে। উদ্যান পালন দফতর গত ২২ মে থেকে বাঁকুড়া ও তালড্যাংরায় স্টল গড়ে জেলার আম বিক্রি শুরু করে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেবল বাঁকুড়ার স্টল থেকেই দৈনিক গড়ে দু’কুইন্টাল আম বিক্রি হয়েছে। জেলার বহু সাধারণ চাষিও নিজেদের আম দফতরকে বিক্রি করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
তবে সরকারি স্বীকৃতির পরে আম নিয়ে মাতামাতি হলেও, জেলার মুসাম্বি ফলন কেমন হবে, তা ভেবে কপালে কিঞ্চিত ভাঁজ পড়েছে কারও কারও। মূলত নাগপুর থেকেই মুসাম্বি আমদানি করে জেলার বাজারে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। বাঁকুড়ার মুসাম্বি এখনও বাজারে সে ভাবে না আসায় এর স্বাদও পাননি জেলাবাসী। ফলে আমের মতো জেলার মুসাম্বি ক্রেতাদের কতটা টানে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সঞ্জয়বাবুর অবশ্য দাবি, “বাঁকুড়ার মুসাম্বির স্বাদ বেশ ভাল। আগে উদ্যানপালন দফতরের মুসাম্বি নিলামে ব্যবসায়ীদের বিক্রি করা হতো। এর চাহিদাও রয়েছে।” রাজ্য অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যালের কথায়, “স্বাদের বিচারে বাঁকুড়ার আমের মতো এই জেলার মুসাম্বিও ক্রেতাদের মধ্যে সাড়া ফেলবে বলে আমি নিশ্চিত।”