E-Paper

এমন ‘পুনর্বাসন’ দেখে অবাক ডেউচা

পাপাই বাগদি

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:১৬
প্রকল্প এলাকার মধ্যে থাকা গাছ তুলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পুনর্বাসন দেওয়ার কাজ চলছে।

প্রকল্প এলাকার মধ্যে থাকা গাছ তুলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পুনর্বাসন দেওয়ার কাজ চলছে। তদারকি করছেন জেলাশাসক বিধান রায়। শুক্রবার মহম্মদবাজারের চাঁদা মৌজায়। নিজস্ব চিত্র।

এলাকার মানুষকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে, ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে একটিও গাছ নষ্ট করা হবে না। সেই মতো প্রকল্প এলাকার বাইরে এক কিলোমিটারের মধ্যেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের চিহ্নিত নির্দিষ্ট জায়গায় ‘ট্রান্সলোকেট’ বা পুনর্বাসন দেওয়ার লক্ষ্যে গাছ তোলার কাজ শুরু হয়েছিল বৃহস্পতিবার থেকে। শুক্রবার জেলাশাসকের উপস্থিতিতে আইআইটি খড়গপুরের তত্ত্বাবধানে খনি এলাকার মধ্যে থাকা গাছগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়া শুরু হল।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কয়লা প্রকল্পের ঘোষণার পরেই স্থানীয়দের একাংশের পক্ষ থেকে গাছ ‘নষ্ট’ করে প্রকল্প করার বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়, গাছ তুলে অন্য জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি মতোই এ দিন কাজ শুরু করা হয়। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হায়দরাবাদের গাছ বিশেষজ্ঞ রামচন্দ্র আপ্পারি এবং হর্টিকালচার সোসাইটির বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে এই কাজ শুরু হয়েছে।

সূত্রের খবর, প্রকল্প এলাকার মধ্যে থাকা ৯৮০টি গাছের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১৮০টিকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। ক্রেনের সাহায্যে গাছগুলিকে তুলে এনে গাছের শিকড়ের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ৮ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট চওড়া চৌকো আকারে গর্ত করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ওষুধ ও গোবর সার দিয়ে গাছগুলোকে পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের দাবি, ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যেই নতুন শিকড় ও পাতা বের হওয়া শুরু হবে। তত দিন পর্যন্ত এক দিন অন্তর ১০০ লিটার করে জল দেওয়া হবে এবং গাছগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।

গাছ পুনর্বাসনের এমন কর্মকাণ্ড দেখে অবাক এলাকার মানুষও। রবি টুডু ও মাধব বিত্তার বলেন, ‘‘গাছকেও যে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় তুলে নিয়ে গিয়ে পুনর্বাসন দেওয়া যায়, তা আমরা এই প্রথম দেখছি। প্রথমে বুঝতে পারছিলাম না। সত্যি কি গাছকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়? তবে এখন দেখে মনে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ওষুধপত্র দিয়ে গাছগুলোকে যে ভাবে বসানো হচ্ছে, তাতে সমস্ত গাছ বেঁচে থাকবে।’’

প্রশাসনের আশ্বাসের পরে এবং গাছ বসানোর বৈজ্ঞনিক পদ্ধতি দেখে তাঁদের আশা, একটি গাছেরও ক্ষতি হবে না।
এলাকার এক আদিবাসী প্রবীণের কথায়, ‘‘আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে মহুয়া, অর্জুন ও মুর্গা গাছ। সেই গাছগুলোকে যে ভাবে যত্ন সহকারে
পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে, তাতে
আমরা খুশি।’’

জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এই প্রকল্প করতে এক জন মানুষকেও উচ্ছেদ করা হবে না।
এমনকি কোনও জঙ্গল নষ্ট করা হবে না। সেটা মেনে নিয়ে প্রকল্প এলাকার মধ্যে থাকা
গাছগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়ার কাজ শুরু করা হল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Deucha Pachami Coal Block mohammadbazar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy