Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঝড়খণ্ডে শুরু রাস্তা সংস্কার

দু’দশক ধরে কারও হাত পড়েনি ওই রাস্তায়। শেষমেশ ওই কাজে হাত লাগাল ঝাড়খণ্ড সরকার। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে শনিবার বান্দোয়ান সীমানা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের শুসনি গ্রামে আনুষ্ঠানিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কের সংস্কারের কাজ শুরু হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৫১
Share: Save:

দু’দশক ধরে কারও হাত পড়েনি ওই রাস্তায়। শেষমেশ ওই কাজে হাত লাগাল ঝাড়খণ্ড সরকার।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে শনিবার বান্দোয়ান সীমানা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের শুসনি গ্রামে আনুষ্ঠানিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কের সংস্কারের কাজ শুরু হল। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জামশেদপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ বিদ্যুৎ মাহাতো। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই রাস্তা যেন বিভীষিকায় পরিণত হয়েছিল। আর তার জন্যই পশ্চিমবঙ্গের দুই থানা বান্দোয়ান এবং বরাবাজারের বাসিন্দারা বেশি সমস্যায় পড়েছিলেন। পড়শি হিসাবে তাদের সমস্যা দেখাও আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।’’ তাঁর দাবি, আগামী এক বছরের মধ্যে ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ হবে।

ঘটনা হল, বান্দোয়ান থেকে ভায়া বরাবাজার হয়ে পুরুলিয়া সদরের দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার। আবার ভায়া মানবাজার হয়ে পুরুলিয়ার দূরত্ব ৮৫ কিলোমিটার। স্বাভাবিক ভাবেই বান্দোয়ানের বাসিন্দারা পুরুলিয়া যেতে বরাবাজারের রাস্তা ধরেন। বান্দোয়ান থেকে বরাবাজারের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঝাড়খণ্ডের অংশে রয়েছে প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তা (১৬৫ নম্বর আন্তঃ রাজ্য সড়ক)। অভিযোগ, প্রায় দু’দশক ধরে সংস্কার না হওয়ায় ওই অংশের রাস্তাই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে দু’রাজ্যের সংবাদমাধ্যমই সরব হয়েছিল। সম্প্রতি বান্দোয়ানের বাসিন্দা মহম্মদ আকিল, সঞ্জয় হালদার, প্রহ্লাদ অগ্রবাল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার সমাধানে দরবার করেন বলে দাবি। স্থানীয় বাসিন্দা মহাদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা সদর পুরুলিয়া যেতে আমাদের এই রাস্তা ছাড়া উপায় নেই। আবার জামশেদপুর কাছে হওয়ায় জেলার বহু ব্যবসায়ী ওখান থেকে মালপত্র নিয়ে এসে ব্যবসা করেন। রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য তাঁদের ব্যবসাও মার খেতে বসেছে।’’ সমস্যার কথা জানতে পেরে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন বলে তাঁদের দাবি।

এ দিকে, ঝাড়খণ্ডের কমলপুর থানার শুসনি গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ মিশ্র, গোলোক মাহাতোরাও বলেন, ‘‘বিভিন্ন কাজে আমাদের জামশেদপুর যেতে হয়। কিন্তু, রাস্তা এমন ভেঙে গিয়েছে যে গাড়িতে চড়ে যেতে ভয় করে। মনে হচ্ছে, এ বার বোধহয় আমাদের কষ্টের দিন শেষ হল।’’ এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ডের স্থানীয় যুগসলাই কেন্দ্রের বিধায়ক আজসু পার্টির (অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস পার্টি) রামচন্দ্র সহিস। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বান্দোয়ান ও বরাবাজারে আমার কয়েক জন বন্ধু রয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে প্রায়ই রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে নালিশ পেতাম। ওঁরা আমাকে লাগাতার এই রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। আজ তাঁদের সঙ্গে সঙ্গেই এলাকার সবার আশা পূর্ণ হল বলে ভাল লাগছে।’’ অন্য দিকে, বিদ্যুৎবাবুর দাবি, আইনি জটিলতায় রাস্তার কাজ থমকে ছিল। মুখ্যমন্ত্রী চান ওই রাস্তার সংস্কার দ্রুত হোক। সম্প্রতি আইনি জটিলতা মিটতেই কাজ শুরু করা গেল।

ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার পূর্ত বিভাগের (সড়ক) এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরুণকুমার রায়না জানান, এই রাস্তা মেরামতির জন্য ১১ মাস সময়সীমা ধার্য হয়েছে। রাস্তার মোট দৈর্ঘ্য ১০.৫৬ কিলোমিটার। ২৪ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। রাস্তা চওড়ার মাপ ৭ মিটার। এ দিনের অনুষ্ঠান ঘিরে দুই রাজ্যের সীমানা এলাকাতেই উৎসাহ দেখা যায়। ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দাদের পাশাপাশি বান্দোয়ান থেকেও গাড়ি ভাড়া করে অনেকে রাস্তা সংস্কারের সূচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jharkhand Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE