নলহাটি আরপিএফ অফিসে ধৃত জাহেদুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।
ট্রেনের আগাম টিকিট কেটে রেখে পরে চড়া দামে বিক্রি করা ও ভুয়ো তথ্য দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল রেলরক্ষী বাহিনী (আরপিএফ)। ধৃতের নাম জাহেদুল ইসলাম। বছর উনত্রিশের ওই য়ুবকের বাড়ি পাইকর থানার কাশিমনগর গ্রামে।
কাশিমনগরে ট্রেনের টিকিট অনলাইনে কেটে দেওয়া এবং ফোটোকপির দোকান আছে জাহেদুলের। রেল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানে অভিযান চালিয়ে জাহেদুলের থেকে ৩৯টি টিকিট বাজেয়াপ্ত করা হয়। যার মূল্য লক্ষাধিক টাকা। এর পরেই ওই যুবতকে গ্রেফতার করা হয়। নলহাটি স্টেশনের আরপিএফ আইহিকারিক সকলদেব কুমার বলেন, ‘‘টিকিট ছাড়াও ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্মার্ট ফোন এবং আরও কিছু যন্ত্র। পুরনো অনেকগুলি ই-টিকিটের প্রিন্টআউটও তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে।’’ পরে পরে ধৃতকে রেলপুলিশের হাতে তুলে দেয় আরপিএফ।
যে-ভাবে এই কারবার চালিয়েছে এসেছেন জাহেদুল, তা দেখে অবাক আরপিএফ আধিকারিকেরা। রেল সূত্রের দাবি, দিল্লি, মুম্বই ও বেঙ্গালুরু সহ দূরপাল্লার রুটের টিকিট ইন্টারনেটে কেটে তা নিজের কাছে কাছে রেখে দিতেন জাহেদুল। পরে ‘সুযোগ বুঝে’ সেই টিকিট চাহিদা অনুযায়ী চড়া দামে বিক্রি করতেন।
আরপিএফের দাবি, ভুয়ো নামে টিকিট করতেন জাহেদুল। আধার কার্ডেও নাম পরিবর্তন করতেন। মুরারই ২ ব্লকে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। অনেকেই বাড়ি ফিরে ফের কাজের জায়গায় যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট পেতেন না। তখনই তাঁদের ‘সহায়’ হিসাবে উদয় হত জাহেদুলের। টিকিটের জন্য তাঁর দোকানে এলেই কেল্লা ফতে! কয়েকশো টাকার টিকিট কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি করে দিতেন জাহেদুল। আরপিএফ সূত্রের খবর, একটি 'আইডি' থেকে বিপুল অঙ্কের টিকিট কাটা হচ্ছে দেখে তাদের সন্দেহ হয়। এর পরেই অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় জাহেদুলকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাশিমনগরের কিছু বাসিন্দা বলেন, ‘‘জাহেদুল অন্যের নামে রেলের টিকিট কেটে রেখে দিত। বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকেরা জানতেন, জাহেদুলের দোকানে বেশি টাকা দিলেই পাওয়া যাবে ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার টিকিট। তাই অনেক পরিযায়ী শ্রমিক ভিড় করতেন ওর দোকানে। তবে, এর পিছনে যে এত বড় কারবার আছে, তা এলাকার মানুষ জানতেন না। আরপিএফ ওকে গ্রেফতার করার পরে আমরা জানতে পারলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy